মনোনয়ন কেন্দ্র নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ার। বালুরঘাটের ব্লক অফিস চত্বরে। ছবি: অমিত মোহান্ত
গোর্খা পার্বত্য পরিষদ এবং ‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (জিটিএ)-এর আমলে দীর্ঘদিন পাহাড়ের নিচুতলার গ্রামগুলিতে উন্নয়ন ততটা পৌঁছয়নি বলেই নানা অভিযোগ শুনতে পাই। রাস্তা, নিকাশি, পানীয় জল, বিদ্যুতের সমস্যার জন্য তাঁদের অনেক দূর দূর পর্যন্ত আর্জি নিয়ে যেতে হয় বলেই অভিযোগ তোলেন গ্রামীণ পাহাড়ি মানুষেরা। এই পরিস্থিতি অন্তত দু’দশক ধরে চলছে। কিন্তু এ বার বোধহয় মরা গাঙে বান আসতে চলেছে। কারণ, বহুদলীয় ব্যবস্থায় পাহাড়ের মানুষ গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতির ভোটে যোগ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাতে অন্তত দীর্ঘদিন পরে পাহাড়বাসী গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন।
শুধু তা-ই নয়, নিজের এলাকার ছোটখাটো কাজকর্ম এখন থেকে পাহাড়বাসী নিজেরাই নিয়ন্ত্রণের অধিকার ফিরে পাবেন ভেবেই আনন্দ লাগছে। এত দিন গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতিগুলি কার্যত অকেজো হয়ে পড়েছিল। বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সরকারি প্রকল্পগুলির সুবিধা ও প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষের ঘর পর্যন্ত পৌঁছচ্ছিল ছিল না বলেই অভিযোগ।
পাহাড়ে এখন অনেকগুলি রাজনৈতিক দল সক্রিয়। তাই বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকায় বিভিন্ন দলের প্রতিনিধিত্ব থাকবে বলেই আশা করছি, যা গণতন্ত্রের খুঁটি আরও শক্ত করবে। দীর্ঘদিন অশান্তির মধ্যে দিয়ে চলেছে পাহাড়। সে সময় ব্যবসা তো বটেই, মানুষের রাজনৈতিক অধিকারও অনেক খর্ব হয়ে পড়ে। তা এখন কিছুটা সামলে উঠেছে। কিন্তু, এখনও ছোটখাটো প্রান্তিক এলাকার জনপদে আরও উন্নয়ন দরকার, যাতে পাহাড়ের অর্থনীতি চাঙ্গা হয়, আরও ছোটখাটো পর্যটন কেন্দ্র গড়ে ওঠে এবং বেশি করে পর্যটকের আগমন ঘটে। পর্যটন ব্যবসাকে ঘিরে পাহাড়ের একটি বড় অংশের অর্থনীতি আরও চাঙ্গা এবং মজবুত হয়ে উঠতে পারবে এই রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার হাত ধরে।
(সিআইআই-এর উত্তরবঙ্গ শাখার প্রাক্তন চেয়ারম্যান)