প্রশাসনিক দফতরে বসেই জেলার আধিকারিকদের সম্পুর্ণ আড়ালে রেখে শিশু পাচারের যাবতীয় কারবার দিনের পর দিন চালিয়ে গিয়েছিলেন সস্মিতা ঘোষ৷ শিশু পাচার নিয়ে হইচই শুরু হওয়ার পর দু’দিনের জন্য জলপাইগুড়িতে এসে এমনটাই দাবি করল রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশন।
এ দিন সকালে কোরক হোম পরিদর্শনে যান রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী ও সচিব সুপর্ণা দাস৷ সেখান থেকে সিডব্লিউসি-তে যান তারা৷ সেখানে গিয়ে সিডব্লিউসি-র সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন৷ সূত্রের খবর, কী ভাবে জলপাইগুড়িতে শিশু পাচারের নামে অনিয়ম চলছিল কিংবা তাদেরকেও কী ভাবে প্রলোভন দেওয়া হয়েছিল, কমিশনের দুই প্রতিনিধিকে জানান সিডব্লিউসি-র সদস্যরা।
তাঁদের অভিযোগ, ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি ও জুন মাসে চন্দনার হোমের অনিয়ম নিয়ে দু’দফায় সিডব্লিউসির তরফে প্রশাসনকে জানানো হলেও কোনও ফল হয়নি। জুলাই মাসে রাজ্যের চাইল্ড রাইটস ট্রাফিকিং জেলা প্রশাসনকে বিষয়টি নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিলেও তা এগোয়নি। বিষয়টি নিয়ে এ দিন কমিশনের চেয়ারপার্সনকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘যদি আমাদের মনে হয় আগের জেলা প্রশাসন বিষয়টিকে তখন খুব একটা গুরুত্ব দেয়নি, তবে নিশ্চয়ই আমাদের রিপোর্টে তার উল্লেখ থাকবে৷’’
তবে একই প্রশ্নের উত্তরে পরে অবশ্য চেয়ারপার্সন জানান, তাঁরা জানতে পেরেছেন, রাজ্য থেকে যে সময় প্রশাসনকে তদন্তের কথা বলা হয় তখনই জেলা প্রশাসনের শীর্ষ পদে বদল হয়৷ সেই সময় অন্যান্য ক্ষেত্রে এমন কিছু সমস্যা এসে যায় যে বিষয়টিতে সেই সময় তারা নজর দিতে পারেননি। এতে গাফিলতির কিছু তারা দেখছেন না৷
চেয়ারপার্সনের কথায়, ‘‘আসলে প্রশাসনের কর্তাদের সম্পুর্ণ আড়ালে রেখেই সস্মিতা দিনের পর দিন এই কারবার চালাচ্ছিলেন৷ সুকৌশলেই তিনি এই কাজে প্রশাসনের অন্য কোন কর্তাকে ঘেঁষতে দিতেন না৷’’
এ দিন জলপাইগুড়ি সিডব্লিউসি-র ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি৷ তার কথায়, ‘‘সিডব্লিউসি-র সক্রিয়তার জন্যই এ ধরণের ঘটনা সামনে এসেছে৷’’ আগামীদিনে এ ধরণের ঘটনা রুখতে কী কী পদক্ষেপ করা উচিত তাদের পেশ করা রিপোর্টে তার উল্লেখ থাকবে বলে জানান চেয়ারপার্সন৷