ফাইল চিত্র।
সাত দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি। তারপরেও শিশুর হার্নিয়া অপারেশনের ব্যবস্থা হয়নি বলে অভিযোগ। অভিযোগ, কখনও চিকিৎসক মেলেনি, কখনও ওটি খালি নেই বলে জানানো হয়। শুধু তাই নয়, অভিযোগ, ১ বছরের ওই শিশু আরমান আলির জ্বরের চিকিৎসাও করা হয়নি। মঙ্গলবার ভোরে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই শিশুর মৃত্যুর পরে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন পরিবারের লোকেরা। রোগীর পরিবারের তরফে হাসপাতাল সুপারের দফতরে এবং মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়িতে অভিযোগ জানানো হয়েছে। সার্জারি বিভাগের প্রধান গৌতম দাস বলেন, ‘‘বিষয়টি জানা নেই। হার্নিয়ার থেকে কোনও সংক্রমণ ছড়িয়েছিল না কি না দেখতে হবে। কেন অপারেশন হচ্ছিল না, খোঁজ নেব।’’
হাসপাতাল এবং পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আরমানের বাড়ি রাজগঞ্জ ব্লকের ভুটকির হাটে। বাবা আব্বাস আলি কৃষক। তিন মাস ধরে হার্নিয়ার জন্য আরমানের চিকিৎসা চলছিল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে। সেই মতো ২৫ জুলাই অস্ত্রোপচারের দিন দিয়েছিলেন চিকিৎসকই। সেই মতো ভর্তি করানো হয়। সেই সঙ্গে জ্বরে আক্রান্ত ছিল ওই শিশু। মায়ের সঙ্গে থাকতে হবে বলে তাকে সার্জারি বিভাগে মহিলাদের ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়।
বাবা আব্বাস আলি, জ্যাঠা আজম আলির অভিযোগ, অস্ত্রোপচার করানো হবে বলেই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। অথচ চিকিৎসক কোনও দিন থাকবেন না, কোনও দিন ওটি পাওয়া যাবে না বলে জানানো হচ্ছিল। এ দিকে জ্বর হলেও তার চিকিৎসা হচ্ছিল না। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলেও স্যালাইন দেওয়া, রক্ত পরীক্ষা কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। চিকিৎসক পরে জানান জ্বর সারলে অস্ত্রোপচার হবে। অথচ জ্বরের চিকিৎসা তাঁরা করলেন না। আজম আলি বলেন, ‘‘চিকিৎসার অভাবেই আরমানকে মরতে হল। এই হাসপাতালের চিকিৎসার উপর আমাদের মতো পরিবারের লোকেরা নির্ভর করে থাকেন। অথচ সঠিক চিকিৎসা এখানে মেলে না। আমরা তা হলে কোথায় যাব?’’ মেডিসিন বিভাগের প্রধান দীপাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ওই শিশুর চিকিৎসার বিষয়টি তাঁরও জানা নেই।
এ দিন ভোর রাতে শিশুটির মৃত্যুর পর ওয়ার্ড থেকে তাদের তাড়িয়ে দিলে সুপারের দফতরে যান অভিযোগ জানাতে। দীর্ঘক্ষণ বসে থেকেও সুপারকে পাননি। পরে এক কর্মী অভিযোগ নেন। হাসপাতাল সুপার মৈত্রেয়ী করকে বারবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।