প্রতীকী ছবি।
চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা তোলার অভিযোগ উঠল এক বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে। অভিযোগ, গঙ্গারামপুরের বিজেপি নেতা সনাতন কর্মকার দলেরই এক সমর্থকদের কাছ থেকে লক্ষাধিক টাকা নিয়েছেন। এমনকি, বিভিন্ন দফতরে চাকরি দেওয়ার নামে জেলায় বহু যুবকের কাছ থেকে তিনি প্রায় এক কোটি টাকা তুলেছেন বলে অভিযোগ।
সনাতন গঙ্গারামপুর ব্লকের বিজেপি সভাপতি। পাশাপাশি, তিনি গত বিধানসভায় গঙ্গারামপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থীও ছিলেন। জেলার এহেন প্রভাবশালী নেতার বিরুদ্ধে টাকা তোলার অভিযোগ ওঠায় স্বাভাবিক ভাবেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় গঙ্গারামপুরের নয়াবাজারের বাসিন্দা বিজেপি সমর্থক দিলীপ বর্মণ গঙ্গারামপুর থানায় সনাতনের নামে অভিযোগ দায়ের করেন। দিলীপের অভিযোগ, গত বছর তাঁর স্ত্রীকে সিভিক ভলান্টিয়ারের চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে এক লক্ষ ২৮ হাজার টাকা দাবি করেন সনাতন। দলেরই নেতার এই কথায় বিশ্বাস করে জমি বিক্রি করে সেই টাকাও তিনি দিয়েছিলেন। কিন্তু এক বছর পরেও চাকরি না হওয়ায় সেই টাকা ফেরত চান দিলীপ। সম্প্রতি তাঁকে ১১ হাজার টাকা ফেরতও দেয় সনাতন। কিন্তু তারপর বাকি টাকা ফেরত দেননি। এ নিয়ে দিলীপের বক্তব্য, ‘‘আমাদের দলের নেতা। তাই ওঁকে বিশ্বাস করে টাকা দিয়েছিলাম। কিন্তু তার পরেও চাকরি হয়নি। এখন টাকা ফেরত চাইতে গেলেই আমাকে হুমকি দিচ্ছেন। শুধু আমার কাছ থেকেই নয়। উনি আরও অনেকের থেকেই বিভিন্ন দফতরে চাকরি দেওয়ার নাম করে কোটি টাকা তুলেছেন।’’
স্থানীয় সূত্রের খবর, সিভিক ভলান্টিয়ার ছাড়াও কেন্দ্রীয় সরকারের স্বচ্ছ ভারত প্রকল্প ও রেলে চাকরি দেওয়ার নাম করে তপন, গঙ্গারামপুর, বুনিয়াদপুরের একাধিক ব্যক্তির থেকে সব মিলিয়ে প্রায় এক কোটি টাকা তুলেছেন সনাতন। নিজেকে জেলার অন্যতম বড় মাপের নেতা হিসেবে পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন এলাকার বিজেপি কর্মীদের থেকে এইভাবে টাকা তুলেছেন বলে অভিযোগ। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে সনাতন বলেন, ‘‘এটা তৃণমূলের চক্রান্ত। চক্রান্ত করে আমার নামে অভিযোগ করা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করুক। তাহলেই সব পরিষ্কার হবে।’’ জেলা বিজেপি নেতৃত্বেরও দাবি, এটা তৃণমূলের ষড়যন্ত্র হতে পারে। এ নিয়ে বিজেপির জেলা সভাপতি শুভেন্দু সরকার বলেন, ‘‘তৃণমূল ষড়যন্ত্র করে আমাদের নেতাদের নামে মিথ্যে অভিযোগ করছে। পুলিশ তদন্ত করুক। পাশাপাশি আমরাও দলগত ভাবে তদন্ত করব। যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তাহলে দলের তরফে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ জেলার পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।’’