প্রস্তুতি: কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়াম। ছবি: বিনোদ দাস
বিচ্ছিন্নতাবাদের বিরুদ্ধে সোমবার রাজ্য বিধানসভায় প্রস্তাব এনেছে রাজ্য সরকার। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বিভাজন রাজ্যের ঐক্য এবং সংহতির পরিপন্থী। রাজ্যের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে ‘সামঞ্জস্যহীন’ বলে উল্লেখ করে ওই ধরনের ‘চেষ্টার’ প্রতিবাদের ডাক দেওয়া হয়েছে। এই আবহে আজ, মঙ্গলবার শিলিগুড়িতে আসছেন মুখ্যমন্ত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শহরের কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামের মাঠে সরকারি পরিষেবা অনুষ্ঠান হবে। সেখানে মাতৃভাষা দিবস পালন হবে বলেও ঠিক রয়েছে। আর এই দার্জিলিং জেলার পাহাড়েই আলাদা রাজ্যের দাবি নতুন করে উঠেছে। বিধানসভার প্রস্তাব পেশের পরে, ফের তা সামনে এসেছে। সেখানে সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী কী বার্তা দেন, সে জন্য অপেক্ষা করছে উত্তরবঙ্গ-সহ গোটা রাজ্য।
সরকারি সূত্রের খবর, মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টে নাগাদ বাগডোগরা বিমানবন্দরে পৌঁছনোর কথা মুখ্যমন্ত্রীর। তাঁর সঙ্গে তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়েরও আসার কথা। তবে অভিষেক সরকারি অনুষ্ঠানে না-ও যেতে পারেন। ঘণ্টা দু’য়েকের অনুষ্ঠানের পরে, মুখ্যমন্ত্রী উত্তরকন্যার বাংলো কন্যাশ্রীতে চলে যাবেন। পর দিন, বুধবার অভিষেককে নিয়ে তাঁর মেঘালয়ে যাওয়ার কথা। সে রাতে ফিরে শিলিগুড়িতে থেকে, বৃহস্পতিবার দুপুরে ১টার পরে, মুখ্যমন্ত্রীর কলকাতায় রওনা হওয়ার কথা।সরকারি সাহায্য প্রদান অনুষ্ঠান হলেও আদতে বঙ্গ ভঙ্গের ‘প্রচার ও ভাবনার’ বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী বার্তা দিতে পারেন বলে মনে করছেন পাহাড়ের রাজনীতির পর্যবেক্ষকেরা। পুজোর পরে, শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গের ক্লাব, বিভিন্ন সংগঠনদের নিয়ে বিজয়া সম্মিলনীতে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সে মঞ্চে কোচবিহারের অনন্ত রায় (মহারাজ), পাহাড়ের অনীত থাপারা ছিলেন। সেখানেও মুখ্যমন্ত্রী বাংলা ভাগের ‘ভাবনা’র বিরুদ্ধে বার্তা দেন। রাজ্যের মনোভাব বুঝলেও কোচবিহার, দার্জিলিঙে আলাদা রাজ্যের দাবি ফের উঠেছে। বিজেপির জনপ্রতিনিধিদের একাংশ তা নিয়ে সরবও হন। যদিও বিজেপির রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় স্তর থেকে দল রাজ্য ভাগের বিষয় নিয়ে ভাবছে না, এমন বার্তা দেওয়া হয়েছে।
হামরো পার্টির সভাপতি অজয় এডওয়ার্ড এ দিনই পাহাড়ে আলাদা রাজ্যের দাবির পক্ষে সরব হয়েছেন। একই পথে তৃণমূল ছেড়ে আসা বিনয় তামাংও। বিনয় বলেন, ‘‘আমরা পাহাড়ের মানুষের দাবি কথা বলছি। রাজ্য সরকার বিধানসভায় প্রস্তাব এনে, তাদের মনোভাব বুঝিয়ে দিয়েছে। আমরাও আমাদের কর্মসূচি জানাব। তবে সবই গণতান্ত্রিক উপায়ে হবে।’’ এ দিনই দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ তথা দলের জাতীয় মুখপাত্র রাজু বিস্তা বলেন, ‘‘তৃণমূল সরকার গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করছে। যে কেউ নিজের দাবি বা বিভাজনের পক্ষে বলতেই পারেন। আইনসভার মাধ্যমে কারও মুখ বন্ধ করা যাবে না।’’