মহানন্দা নদীতে ছটপুজোয় ভক্তদের ভিড় উপচে পড়ল। — নিজস্ব চিত্র।
ছটপুজোর দিন মহানন্দা নদীকে দূষণের হাত থেকে বাঁচাতে সবাইকে একজোট হওয়ার ডাক দিলেন শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র পারিষদ কমল অগ্রবাল। রবিবার বিকেলে মহানন্দার লালমোহন মৌলিক ঘাট থেকে কমলবাবু ওই আহ্বান জানান।
ছোটবেলার স্মৃতির প্রসঙ্গ টেনে এনে কমলবাবু বলেন, ‘‘এক সময়ে মহানন্দা ছিল অনেক বড়। সারা বছর জলে টলটল করত। চওড়াও ছিল। এখন শহর বড় হওয়ায় নদী ক্রমশ ছোট হয়ে আসছে। নদীর চর দখল হচ্ছে। দূষিত হচ্ছে মলমূত্রে।’’ তাই রাজ্য সরকার, পুরসভা, স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে কমিটি গড়ে দিল্লিতে দরবার করার পক্ষে সওয়াল করেছেন সিপিএমের কাউন্সিলর তথা মেয়র পারিষদ।
তাঁর বক্তব্যকে সমর্থন করে পাশে দাঁড়িয়েছেন আইনজীবী তথা প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর জ্যোৎস্না অগ্রবালও। জ্যোৎস্নাদেবী জানান, পুজোর সময় নদীর ঘাট সাফাই হয়। তা ছাড়া অন্য সময় নদীর ধারে যাওয়াই যায় না বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘‘যা অবস্থা তা দেখে দুঃখ হয়। সবাইকে উদ্যোগী হয়ে মহানন্দাকে বাঁচাতেই হবে।’’
রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ মহানন্দাকে উত্তরবঙ্গের অন্যতম দূষিত নদী হিসাবে চিহ্নিত করেছে। পরিবেশপ্রেমী সংগঠন ন্যাফের মুখপাত্র অনিমেষ বসু মনে করেন, মহানন্দাকে বাঁচাতে সব রাজনৈতিক দল একযোগে সরব হলেই কাজের কাজ হতে পারে।
বাম আমলেই মহানন্দা অ্যাকশন প্ল্যানে কেন্দ্র সম্মতি দেয়। দু’দফায় ৭০ কোটি টাকা মেলে। কাজও শুরু হয়। বাম আমলেই নিম্ন মানের কাজের অভিযোগ ওঠে। পরে তৃণমূল জমানায় এসজেডিএ-তেও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় সেই কাজ আপাতত বন্ধ। শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র তথা শহরের বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্যের দাবি, ‘‘আমাদের সময়ে কোনও দুর্নীতি হয়নি। বরং, কাজ দ্রুতগতিতে হয়েছে।’’ তা নিয়ে এখনও তাঁরা দিল্লিতে দরবার করেছেন বলে জানান। কিন্তু, রাজ্য সরকার না এগোলে কাজ হবে না বলে দাবি তাঁর।
তবে পুরসভার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব। তিনি বলেন, ‘‘নদী সংলগ্ন এলাকা দূষণমুক্ত রাখার দায়িত্ব পুরসভার। সেই কাজটা ওঁরা সারা বছর করছেন না বলেই তো দূষণ বাড়ছে।’’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘‘দেখি, পুরসভা মহানন্দার দূষণ রুখতে নিজেদের দায়িত্ব কতটা পালন করে।’’ তা না হলে রাজ্য সরকার ব্যবস্থা করবে বলে তাঁর দাবি।