—প্রতীকী চিত্র।
একদিকে প্রকৃতি, সবুজের হাতছানি। অন্যদিকে প্রাচীন নির্দশন আর ইতিহাসের টান। এমন সম্পদে ভরপুর উত্তরের দুই জেলাকে নিয়ে পর্যটন সার্কিট গড়ে তুলতে তোড়জোড় শুরু হয়েছে।
আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহার জেলা নিয়ে ওই সার্কিট গড়ে তোলার ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছে বন ও পর্যটন দফতর। দুই দফতরের তরফে দুই জেলার জন্য পরিকল্পনাও হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে, আলিপুরদুয়ার জেলার বিভিন্ন এলাকায় পর্যটকদের ঢল নামলেও কোচবিহারে তাঁদের অনেকেই আসেন না। অথচ কোচবিহারের রাজবাড়ি থেকে মদনমোহন মন্দির, বাণেশ্বর থেকে গোসানিমারির নানা পুরাকীর্তি, স্থাপত্য ছড়িয়ে রয়েছে। রসিকবিল, পাতলাখাওয়ার বনাঞ্চল আছে। জেলার ওই সব সম্পদকে হাতিয়ার করেই কোচবিহারেও পর্যটক টানার চেষ্টা হচ্ছে।
রাজ্যের বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন বলেন, “আমরা কাজ শুরু করে দিয়েছি। কোচবিহারের পাতলাখাওয়ায় গন্ডারের তৃতীয় আবাসস্থল তৈরির প্রক্রিয়া চলছে। ওই প্রকল্প হলে কোচবিহারে আসার আগ্রহ পর্যটকদের বাড়বে। আলিপুরদুয়ারের জন্যও প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।” তিনি জানিয়েছেন, পর্যটন দফতরের সঙ্গে আলোচনা করে যৌথভাবে আরও কী কী করা যায় তাও ভাবা হচ্ছে।
সম্প্রতি কোচবিহারে এসেছিলেন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। তিনি প্রকাশ্যেই কোচবিহার-আলিপুরদুয়ার নিয়ে পর্যটন সার্কিট গড়ে তোলার ব্যাপারে সওয়াল করেন। গৌতমবাবু জানিয়েদেন, আলিপুরদুয়ারে পর্যটকেরা আসছেন। তাদের কোচবিহারেও আনতে হবে। ওই প্রসঙ্গেই দুই জেলা নিয়ে পর্যটন সার্কিট গড়ে তোলার কথা বলেছেন তিনি। দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারের পর্যটক আকর্ষণ বাড়াতে বক্সা দুর্গ, ভূটানঘাট, হাতিপোতা, মাদারিহাট-সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় প্রকল্পের উদ্যোগের কথা ভাবা হচ্ছে। কোচবিহারের ক্ষেত্রে রাজবাড়িতে গোলাপ উদ্যান, লাইট অ্যান্ড সাউন্ড, সাগরদিঘি চত্বরে ঘোড়ার গাড়ি চালু করা, রসিকবিলের উন্নয়নের পরিকল্পনাও রয়েছে তাদের।
বন ও প্রশাসন সূত্রের খবর, বক্সা ও জলদাপাড়ার জঙ্গলে ছাড়ার জন্য অসম থেকে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার আনা হবে। ওই ব্যাপারে প্রস্তুতি অনেকটাই এগিয়েছে। বক্স্যা ব্যাঘ্র প্রকল্পের এলাকা থেকে বনবস্তি সরানর ব্যাপারে চিন্তাভাবনা হচ্ছে। সেইসঙ্গে পাতলাখাওয়ায় গন্ডার আবাসস্থল হলে দুটি জেলা নিয়ে আকর্ষণ বাড়বে। তাছাড়া কোচবিহার শহরকে হেরিটেজ ঘোষণার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। পর্যটন ব্যবসায়ীরা ওই উদ্যোগে খুশি। কোচবিহারের ক্ষেত্রে প্রাচীন নির্দশনই মুখ্য আকর্ষণ হতে পারে বলে তাদের একাংশের ধারণা। পর্যটন ব্যবসায়ী সম্রাট স্যানাল বলেন, “আলিপুরদুয়ারের জঙ্গল, কোচবিহারের ইতিহাস, হেরিটেজ স্থাপত্য বড় আকর্ষণ। প্রকৃতি, ইতিহাসের মেলবন্ধনের যোগসূত্র হলে দুই জেলায় উত্তরের বড় ট্যুরিজম হাব হতে পারে। আরও ভাল যোগাযোগ, সংশ্লিষ্ট দফতরের সমন্বয়ও দরকার।”