বিজেপির ঘেরাও কর্মসূচী। নিজস্ব চিত্র।
বিজেপির জেলাশাসক দফতর ঘেরাও ঘিরে সোমবার দুপুরে কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নিল আলিপুরদুয়ারের ডুয়ার্সকন্যা চত্বর। অভিযোগ, ডুয়ার্সকন্যা চত্বরে বাঁশ দিয়ে তৈরি ব্যারিকেডে বাধা পেতে আন্দোলনকারীদের দিক থেকে পুলিশের দিকে ইটবৃষ্টি শুরু হয়। পাল্টা জলকামান চালানোর পাশাপাশি কাঁদানে গ্যাসের সেল ছোঁড়ে পুলিশ। আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করা হয় বলেও অভিযোগ। পুলিশ সূত্রে খবর, বিজেপির কর্মী-সমর্থকদের ছোঁড়া ইট-পাথরের আঘাতে চার জন মহিলা পুলিশকর্মী-সহ মোট ১২ জন পুলিশকর্মী জখম হয়েছেন। যাঁদের মধ্যে এক জনকে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বিজেপির পাল্টা অভিযোগ, পুলিশের লাঠির আঘাতে তাদের অন্তত পনেরো জন নেতা-কর্মী জখম হন। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থলের ভিডিয়ো ফুটেজ় দেখে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাথর ছোঁড়ার ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করার কাজ চলছে।
আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ তথা দলের জেলা সভাপতি মনোজ টিগ্গা বলেন, “আমাদের কোনও নেতা-কর্মী পুলিশের দিকে ঢিল ছোঁড়েননি। আমাদের নেতা-কর্মী শান্তিপূর্ণ ভাবেই আন্দোলন করছিলেন। পুলিশই বিনা কারণে আমাদের নেতা-কর্মীদের দিকে জলকামান চালানোর পাশাপাশি কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটায় ও লাঠিচার্জ করে। যাতে জখম হন দলের জেলা সহ-সভাপতি জয়ন্ত রায়-সহ আমাদের কয়েক জন নেতা-কর্মী। অনেককে হাসপাতালে গিয়ে প্রাথমিক চিকিত্সাও করানো হয়।”
তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক মৃদুল গোস্বামী বলেন, “আর জি করের ঘটনায় দোষীদের আমরাও ফাঁসি চাই। কিন্তু ওই ঘটনা সামনে রেখে বিজেপি গোটা রাজ্যকে অশান্ত করে তোলার খেলায় মেতেছে। যা মানা যায় না।”
আর জি করের ঘটনা নিয়ে এদিন টিগ্গার নেতৃত্বে আলিপুরদুয়ার শহরে মিছিল করে ডুয়ার্সকন্যা চত্বরে পৌঁছয় দলের কর্মী-সমর্থকরা। ডুয়ার্সকন্যা চত্বরে পৌঁছতে প্রথমে লোহার গার্ড-রেল দিয়ে তৈরি পুলিশের একটি ব্যারিকেড ভেঙে ফেলেন তাঁরা। তার পরে প্যারেড গ্রাউন্ড সংলগ্ন রাস্তায় বাঁশ দিয়ে তৈরি ব্যারিকেডে আটকে যায় ওই মিছিল। প্রথমে সেই ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়ে ব্যারিকেডের বাঁধন খোলার চেষ্টা শুরু হয় বলে অভিযোগ। সেই সময় দু’পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। তখনই এক দিকে আন্দোলনকারীদের দিক থেকে পুলিশের দিকে ইট-বৃষ্টি ও পাল্টা পুলিশের পক্ষ থেকে জলকামান চালানো হয়। তাতেও পরিস্থিতি না-বদলালে কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাঁটায় পুলিশ। অভিযোগ, এর পরে লাঠিচার্জ করে বিজেপির কর্মী-সমর্থকদের ছত্রভঙ্গ করা হয়।
যদিও পুলিশের তরফে লাঠিচার্জের কথা মানা হয়নি। পুলিশ জানিয়েছে, মারমুখী আন্দোলনকারীদের দিকে শুধু লাঠি উঁচিয়ে তাড়া করে সরিয়ে দেওয়া হয়। আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশী বলেন, “কিছুটা বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছিল। কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ তা নিয়ন্ত্রণ করে।”