কাবু: চান্দামারিতে বাঁধা হচ্ছে একটি বাইসনকে। নিজস্ব চিত্র
প্রায় পাঁচ ঘণ্টা তাণ্ডব চালানোর পর ঘুম পাড়ানি গুলিতে কাবু দু’টি বাইসনের মৃত্যু হল। মৃত বাইসন দু’টির একটি পুরুষ, অন্যটি স্ত্রী। রবিবার ভোরে কোচবিহার কোতোয়ালি থানার দু’টি পৃথক এলাকায় ওই বাইসন দু’টি ঢুকে পড়ে। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোর পাঁচটা নাগাদ কোচবিহার ১ ব্লকের চিলকিরহাট পঞ্চায়েতের কাচামারি এলাকায় পুরুষ বাইসনটিকে গ্রামের পথে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়। প্রায় একই সময়ে স্ত্রী বাইসনটি কোচবিহার ২ ব্লকের নতিবাড়ি এলাকা দাপিয়ে বেড়াচ্ছিল। খবর পেয়ে জলদাপাড়া থেকে বনদফতরের কর্মীরা ঘুমপাড়ানি গুলি নিয়ে এলাকায় ছুটে যান। ঘুমপাড়ানি গুলি ছুড়ে কাবু করার পর চিলাপাতায় নিয়ে যাওয়ার পরে অবশ্য দুটি বাইসনের মৃত্যু হয়।
এ দিন বাইসনের সামনে পড়ে গিয়ে জখম হন কাচামারি গ্রামের বাসিন্দা আরতি মিস্ত্রি নামে এক বৃদ্ধা। আর এক জখম সুনীল বর্মন চিলকিরহাটের বাসিন্দা। দু’জনেই কোচবিহার জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন বলেন, “সরকারি নিয়ম অনুযায়ী জখমদের চিকিৎসা-সহ অন্য সুবিধা দেওয়া হবে।” তাঁর সংযোজন, বাইসনের হৃদযন্ত্র দুর্বল হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ঘুম পাড়ানি গুলিতে কাবু করার পর তাদের বাঁচানো যায় না। তবে এ দিন কী হয়েছে, বিশদে খোঁজখবর নিয়ে দেখা হবে। ডিএফও বিমান বিশ্বাস জানান, দু’টি বাইসনেরই পরে মৃত্যু হয়েছে।
বাসিন্দারা জানান, তখনও সবার ঘুম ভাঙেনি। আরতিদেবী সেই সময়ে বাড়ির বাইরে থাকায় সামনে পেয়ে তাঁকে গুঁতিয়ে জখম করে বাইসনটি। বাড়ির সামনে থাকা সুনীলবাবুকেও পিছন থেকে গুঁতো মারে বাইসন। এক গ্রামবাসী কার্তিক বসুনিয়া বলেন, “মোষ ভেবে অনেকে প্রাণীটিকে দেখতে গিয়েছিলেন। তবে হামলার পরে সবার ভুল ভেঙে যায়।”
বন দফতর সূত্রের খবর, পাতলাখাওয়া কিংবা চিলাপাতার জঙ্গল থেকে বাইসন দু’টি লোকালয়ে ঢুকে পড়েছিল বলে অনুমান করা হচ্ছে। কাচাবাড়ি, মোরঙ্গাবাড়ি, চিলকিরহাট জুড়ে তাণ্ডব চালিয়েছে। এক বন কর্তা জানান, ঘোকসাডাঙায় শুক্রবার রাতে দু’টি বাইসন ঢুকে পড়ে। পথ ভুলে বিচ্ছিন্ন হয়ে ওই দু’টিই এ দিন সকালে কোচবিহার সদরের দুই লোকালয়ে ঢুকে পড়েছিল।