চমচমের জিআই স্বীকৃতির আবেদন নিয়ে কনভেনশনের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে বেলাকোবায়। রসগোল্লার জিআই স্বীকৃতির পর থেকেই বেলাকোবার চমচমের স্বীকৃতির আবেদনের তোড়জোড় শুরু হয়েছে। জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনের তরফে ইতিমধ্যেই খাদ্য প্র্রক্রিয়াকরণ দফতরকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। চমচমের জিআই স্বীকৃতি নিয়ে উদ্যোগী হতে জেলা শিল্প কেন্দ্রকেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের। এই পরিস্থিতিতে নাগরিক কনভেনশন ডাকা হয়েছে বেলাকোবায়। চমচমের একাধিক দোকান রয়েছে বেলাকোবায়। কারা আবেদন করবেন, স্বীকৃতি পেতে যে তথ্য এবং ঐতিহাসিক খুঁটিনাটি প্রয়োজন সেগুলি কারা জোগাড় করবে সে সব কনভেনশনে স্থির হবে। বেলাকোবা নাগরিক সমিতির সম্পাদক তপন শূর বলেন, ‘‘বেলাকোবার চমচম নিয়ে পর্যটকদের যথেষ্ট আগ্রহ রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই আমরা এই মিষ্টির স্বীকৃতির দাবি করছি। আমরা প্রথমে ভেবেছিলাম বিপণন ব্যবস্থা করা, পর্যটকদের জানানো এমন সব পদক্ষেপই যথেষ্ট। তবে রসগোল্লা আমাদের পথ দেখিয়েছে। আমরা এখন জিআই স্বীকৃতি পাওয়ার চেষ্টা করছি।’’
রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব নিজেকে বেলাকোবার চমচমের অন্যতম ভক্ত বলে মনে করেন। কনভেনশনের কথা শুনেছেন তিনিও। গৌতমবাবুর কথায়, ‘‘হোক না ভালই তো। বেলাকোবার চমচম যদি জিআই স্বীকৃতি পায় তবে আমার দফতরও অনেক পদক্ষেপ করতে পারে।’’ রাজগঞ্জের বিধায়ক খগেশ্বর রায়ের কথায়, ‘‘আমি আজ পর্যন্ত কত জায়গায় যে এই মিষ্টির হাব তৈরি সহ কারিগরদের সাহায্য-অনুদান জদেওয়ার দাবিতে সরব হয়েছে তার ইয়াত্তা নেই। জিআই স্বীকৃতি সেই পথ প্রশস্ত করবে। কনভেনশন হোক, আমার সবরকম সহযোগিতা থাকবে।’’
সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী মঙ্গলবার কনভেনশন হতে পারে। তবে সে সময় মুখ্যমন্ত্রীর উত্তরবঙ্গ সফর থাকায় কনভেনশন পরে করা যায় কিনা তা নিয়েও ভাবনাচিন্তা বেলাকোবা নাগরিক সমিতির সঙ্গে শিলিগুড়ির লিগাল এইড ফোরামও কনভেনশনে সহযোগিতা করবে। ফোরামের সম্পাদক অমিত সরকার বলেন, ‘‘জিআই আবেদনের স্বীকৃতি পেতে যে নথি তৈরি করতে হয় এবং আবেদনের নানা প্রক্রিয়ায় আমরা সহযোগিতা করব।’’ বেলাকোবার বাসিন্দাদের দাবি, চমচমের বয়স সত্তরের বেশি। দেশভাগের সময়ে টাঙ্গাইলের চমচমের কারিগররা বেলাকোবায় চলে আসে। তখন থেকে পোড়াবাড়ি ঘরানার কড়া পাকের চমচমের শুরু বেলাকোবায়। তবে বেলাকোবার চমচমের নিজস্ব কিছু বিশেষত্বও রয়েছে। সে কারণেই জিআই স্বীকৃতির দাবি উঠেছে। মিষ্টি নিয়ে কনভেনশনের প্রস্তুতি নিয়ে উৎসাহও তৈরি হয়েছে বেলাকোবায়।