প্রতীকী ছবি।
জঙ্গি সংগঠন আল কায়দার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে কেরলে গ্রেফতার করা হয়েছে মুর্শিদাবাদের তিন পরিযায়ী শ্রমিককে।
এমন পরিস্থিতিতে লকডাউনে ভিন্ রাজ্য থেকে ফিরে আসা মুর্শিদাবাদের পড়শি মালদহের পরিযায়ী শ্রমিকদের সম্পর্কেও এ বার খোঁজ নিতে শুরু করেছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। নজরদারি শুরু করেছে রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগও। জানা গিয়েছে, বিশেষ করে কেরল ফেরত পরিযায়ী শ্রমিকদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহে মাঠে নেমেছে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
পরিযায়ী শ্রমিকদের মধ্যে জঙ্গি যোগ থাকার ঘটনায় উদ্বিগ্ন জেলার শ্রমিকদের একাংশ। তাঁদের দাবি, বাড়তি উপার্জনের আশায় পাড়ি দিতে হয় ভিন্ রাজ্যে। কাজ মিললেও ভিন্ রাজ্যে নানা সমস্যার মধ্যে থাকতে হয়। এরই মধ্যে পড়শি জেলার তিন শ্রমিক জঙ্গি সন্দেহে গ্রেফতারের প্রভাব তাঁদের উপরেও পড়ার আশঙ্কা করছেন মালদহের পরিযায়ী শ্রমিকের একটা বড় অংশ। কালিয়াচক ৩ ব্লকের চড় সুজাপুরের বাসিন্দা সত্যজিৎ মণ্ডল বলেন, “কেরলের কোভালামে জেলার ২৫ জন শ্রমিক একসঙ্গে কাজ করতাম। লকডাউনে সেখানে আটকে পড়েছিলাম। কোনও রকমে বাড়ি ফিরে এসেছি। ফের কেরলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। এমন অবস্থায় পড়শি জেলার তিন শ্রমিক জঙ্গি সন্দেহে গ্রেফতার হওয়ায় আমরা ওখানে ফের কাজ পাব কিনা বুঝতে পারছি না।” কালিয়াচকেরই বাসিন্দা তফিকুল ইসলাম বলেন, “ভিন্ রাজ্যে কাজে গিয়ে এমনিতেই আমাদের বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে থাকতে হয়। এখন কাজ মিলবে কিনা তা নিয়েই তৈরি হয়েছে সংশয়।”
মালদহ জেলার একাংশ শ্রমিক কাজের খোঁজে পাড়ি দেন ভিন্ রাজ্যে। কত সংখ্যক শ্রমিক জেলা থেকে ভিন্ রাজ্যে কাজে যান, সেই সম্পর্কে কোনও তথ্যই ছিল না প্রশাসনের কাছে। যদিও লকডাউনের পরে একটা তথ্য সংগ্রহ করেছে জেলা প্রশাসন। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার শ্রমিকেরা কাজে গিয়ে লকডাউনে ভিন্ রাজ্যে আটকে পড়েছিলেন। ট্রেন, বাসে করে তাঁদের বাড়ি ফেরানো হয়। লকডাউনের সময় প্রায় দেড় লক্ষ শ্রমিক বাড়ি ফিরেছেন। যদিও সেই সংখ্যা আরও বেশি হবে বলে দাবি পুলিশের।
এরই মধ্যে জঙ্গি সংগঠন আল কায়দার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে মুর্শিদাবাদের ছয় জনকে গ্রেফতার করেছে এনআইএ। কেরল থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে আরও তিন পরিযায়ী শ্রমিককে। কেরল থেকে কারা ফিরেছেন এবং নতুন করে কেরলে কারা গিয়েছেন সেই তথ্য এনআইএ সংগ্রহ করছে বলে জানা গিয়েছে। জানা গিয়েছে, এনআইএ আধিকারিকরা নিয়মিত তল্লাশি চালাচ্ছেন কালিয়াচকের বিভিন্ন এলাকায়। একই সঙ্গে খোঁজখবর নিচ্ছে পুলিশও।
মালদহের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বিষয়টি নিয়ে বলেন, ‘‘আমাদের তরফ থেকেও বিভিন্ন বিষয়ে নজর রাখা হচ্ছে।’’