মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে রুপসানা পারভিনকে ডাকা হয় জেলাশাসকের দফতরে। —নিজস্ব চিত্র।
আড়াই মাসের তিন সন্তানকে নিয়ে একেবারে নাজেহাল অবস্থা। তার উপর স্বামী অসুস্থ। তিন সন্তানকে কী ভাবে লালন-পালন করবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছিলেন কোচবিহারের তুফানগঞ্জের বাঁশরাজা এলাকার বাসিন্দা রুপসানা পারভিন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করার পর হাসি ফুটল সেই পারভিনের মুখে। একটু দুশ্চিন্তামুক্ত হলেন তিনি। একটা কাজের আশায় প্রহর গুনছেন ওই বধূ।
আসলে কোনও উপায়ান্তর না দেখে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছিলেন রুপসানা। সোমবার কোচবিহার রাসমেলা ময়দানে মুখ্যমন্ত্রী সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দেন। তখন তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য চেষ্টা করেন। কিন্তু নিরাপত্তার জন্য মঞ্চ পর্যন্ত পৌঁছোতে পারেননি বধূ। মঞ্চ থেকে কিছুটা দূরেই মুখ্যমন্ত্রীর জন্য অপেক্ষা করছিলেন তিনি। মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী নামতেই দেখা করার জন্য দৌড়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁকে আটকে দেন। মমতার অবশ্য চোখ এড়ায়নি। তিনি রুপসানাকে কাছে ডেকে নেন। রুপসানাও মুখ্যমন্ত্রীকে তাঁর অসুবিধার কথা খুলে বলেন। জানান, তাঁর স্বামী অসুস্থ। তিনি নিজে রোজগার করার মতো কোনও কাজ করেন না। আড়াই মাসের তিনটি যমজ সন্তান রয়েছে তাঁর। এখন সংসার কেমন চলবে, তা নিয়ে ভেবে কূল পাচ্ছেন না। স্বামী তাঁর মামার বাড়িতে আশ্রয়ে আছেন। আর তিনি তিন সন্তানকে নিয়ে রয়েছেন বাপের বাড়িতে। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে একটি কাজের আর্জি জানান রুপসানা। মন দিয়ে মহিলার সমস্যার কথা শুনছিলেন মমতা। তাঁকে কোচবিহারের জেলাশাসক অরবিন্দকুমার মিনার কাছে পাঠান। নির্দেশ দেন ওই মহিলাকে যেন প্রশাসনিক ভাবে সহায়তা করা হয়।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মাফিক মঙ্গলবারই রুপসানাকে জেলা শাসকের দফতরের ডেকে পাঠান জেলাশাসক। তাঁর সঙ্গে কথা বলেন এবং খুব দ্রুত কর্মসংস্থানের আশ্বাস দেন মিনা। তা ছাড়াও আর্থিক ভাবে কী ভাবে তাঁকে সহযোগিতা করা যায়, সেই বিষয়ে ভাবা হচ্ছে বলে জানান জেলাশাসক। প্রশাসনিক দফতর থেকে বেরিয়ে আশ্বস্ত দেখায় রুপসানাকে। তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার পর আজ জেলাশাসক আমার সঙ্গে কথা বলেছেন। আশা করছি, একটা কাজ পাব।’’ বস্তুত, মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস এবং জেলাশাসক তাঁকে অনেকটাই ভরসা যুগিয়েছে।
কোচবিহারের জেলাশাসক বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে রুপসানা পারভিন দেখা করেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী আমাদের নির্দেশ দিয়েছে যে ওই মহিলার যা সমস্যা রয়েছে, তা শুনে তিনি যাতে ভাল ভাবে থাকতে পারেন, তার একটা ব্যবস্থা করতে হবে। উনি সরকারি বেশ কিছু প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন। যে হেতু মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, তাই আমরা রুপসানাকে ডেকে কথা বলেছি। তাঁর সমস্যার কথা শুনেছি। আগামী দিনে যাতে তাঁর পরিবার ভাল ভাবে থাকতে পারে, তার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’’