গুলি, মারধরে তরজা

তৃণমূলের এক যুব নেতা প্রিয়তোষ অধিকারী ও তাঁর স্ত্রী মাম্পি রায়চৌধুরীকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।

Advertisement

পার্থ চক্রবর্তী

আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৯ ০৪:৪৫
Share:

গুলিবিদ্ধ যুবক। নিজস্ব চিত্র

তপসিখাতার পাটকাপাড়ায় গুলিবিদ্ধ হলেন এক তৃণমূল কর্মী রঙ্গলাল চৌধুরী। সেই সঙ্গে তৃণমূলের এক যুব নেতা প্রিয়তোষ অধিকারী ও তাঁর স্ত্রী মাম্পি রায়চৌধুরীকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। বুধবার রাতের এই ঘটনাকে ঘিরে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দফায় দফায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। তৃণমূল সরাসরি বিজেপির দিকে আঙুল তুলেছে। বিজেপি নেতারা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

Advertisement

রঙ্গলালের পরিবার সূত্রের খবর, তার মৃত্যু হয়েছে ভেবে দুষ্কৃতীরা সেখান থেকে সরে যেতেই নিজের অটো চালিয়ে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে বাড়িতে যান রঙ্গলাল। এখন তিনি শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি। আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা হচ্ছে প্রিয়তোষ ও মাম্পির। দু’টি ঘটনাতেই যোগেন রায় ওরফে খসুয়া সহ তাঁর দুই সঙ্গীর বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল উঠেছে। যাঁরা এলাকায় বিজেপি কর্মী বলে পরিচিত। যদিও বিজেপির জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা বলেন, ‘‘খসুয়া আমাদের দলের কর্মী নন। এই ঘটনা তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল। এর সঙ্গে বিজেপির কোনও সম্পর্ক নেই।’’

কিন্তু তৃণমূলের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, গত লোকসভা নির্বাচনে জেলার বিভিন্ন জায়গার মতো পাটকাপাড়ার কিছু কিছু জায়গাতেও আধিপত্য বৃদ্ধি করে বিজেপি আর তার পরই এলাকায় খসুয়ার মতো বিজেপি কর্মীদের দাপট শুরু হয়। তবে রঙ্গলালের দাদা আচ্ছেলাল বলেন, ‘‘দু’জন দু’টি দল করলেও আমার ভাই ও খসুয়া বন্ধু ছিল।’’ পেশায় পঞ্চায়েত দফতরের কর্মী প্রিয়তোষের অভিযোগ, ‘বাড়ি ফেরার সময় খসুয়া মারধর করে টাকা ও সোনার মালা ছিনিয়ে নেয়। বন্দুকও ঠেকায়।’’

Advertisement

সেই ঢেরু চৌপথীতেই রঙ্গলালের উপর গুলি চালানোর ঘটনাটি ঘটে। রঙ্গলাল অটোতে করে এলাকার একটি বাড়িতে পুজোর অনুষ্ঠানে চেয়ার দিতে গিয়েছিলেন। তাঁর বাবা বরমদেব চৌধুরীর অভিযোগ, ‘‘সেখান থেকে খসুয়া আমার ছেলেকে ফোন করে ঢেরু চৌপথিতে ডেকে পাঠায়। ছেলে আসতেই ওর উপর গুলি চালিয়ে দেয় খসুয়ারা।’’ তার পর খসুয়া পলাতক।

আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি মনোরঞ্জন দে-র অভিযোগ, এর আগে খসুয়ার বিরুদ্ধে একাধিকবার পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছে। কিন্তু বারবার ছাড়া পেয়ে গিয়েছে। আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী বলেন, ‘‘অভিযুক্তর বিরুদ্ধে যত বার অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে প্রতি বার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এই ঘটনার পরও সবাইকে ধরার চেষ্টা চলছে।’’

আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সৌরব চক্রবর্তী বলেন, ‘‘রঙ্গলালের একটি চোখ নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কার কথা জানান চিকিৎসকরা। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এ দিন রঙ্গলালকে দেখতে শিলিগুড়ি গিয়েছিলাম।’’

এ দিকে, বিজেপি সাংসদ জন বার্লাকে এক ব্যক্তি জড়িয়ে ধরে রয়েছেন, এমন একটি ছবি এ দিন সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ায়। সেই ব্যক্তিই খসুয়া বলে দাবিও করা হয়েছে। জন অবশ্য বলেন, ‘‘কোনও জায়গায় গেলে অনেকেই ছবি তোলার আবদার করেন। অনেক সময় সেই ছবি তোলার আবদার মেটাতে হয়। তবে খসুয়া বলে কাউকে চিনি না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement