অপেক্ষায়: দুয়ারে সরকার শিবিরে তিনবার আবেদন করেও স্বাস্থ্যসাথী কার্ড মেলেনি মালদহের সাতঘরিয়া গ্রামের বধূ মাউদুদা খাতুন ও রুনা বিবির। বুধবার। নিজস্ব চিত্র।
২০২০ সালের ডিসেম্বরে প্রথম দুয়ারে সরকার শিবিরে আবেদন করেছিলেন। মেলেনি স্বাস্থ্যসাথী কার্ড। পরের দু’টি দুয়ারে সরকার শিবিরেও আবেদন করেন তাঁরা। অথচ স্বাস্থ্যসাথী কার্ড অধরাই থেকে গিয়েছে মালদহের নরহাট্টা গ্রাম পঞ্চায়েতের সাতঘরিয়ার গৃহবধূ মাউদুদা খাতুন, রুনা বিবি, আসনারা খাতুনদের। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড না থাকায় লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের সুবিধা থেকে তাঁরা বঞ্চিত বলেও দাবি। এ দিকে আগামী ২১ তারিখ থেকে আবার চতুর্থ দুয়ারে সরকার শিবির শুরু হতে চলেছে। কার্ড না পেলেও তাঁরা নাছোড়বান্দা। ফের দুয়ারে সরকার শিবিরে গিয়ে একই আবেদন তাঁরা করতে চান। কিন্তু প্রশ্ন একটাই, এ বারে আবেদন করে শেষ পর্যন্ত স্বাস্থ্যসাথী কার্ড পাবেন তো?
ইংরেজবাজার ব্লকের নরহাট্টা গ্রাম পঞ্চায়েতের সাতঘরিয়া পশ্চিম পাড়ায় বাড়ি মাউদুদা খাতুনের। প্রাইভেট টিউশন পড়িয়ে কোনওমতে সংসার চলে। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড পেতে দু’বছর ধরে ঘুরেই চলেছেন। মাউদুদা বলেন, ‘‘২০২০ সালের ডিসেম্বরে প্রথম দুয়ারে সরকার শিবির বসেছিল আমাদের পঞ্চায়েতের সাতঘরিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সেখানেই স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের জন্য আবেদন করি। না মেলায় পরের বছর অগস্টে দ্বিতীয় দুয়ারে সরকার শিবিরে ফের আবেদন করি। সে বারও হয়নি। এ বার ফেব্রুয়ারিতে তৃতীয় শিবির হয়েছিল বাবুপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সেখানেও আবেদন করেছিলাম। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কার্ড পেলাম না।’’ তাঁর দাবি, ‘‘স্বাস্থ্যসাথী কার্ড না হওয়ায় লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের জন্য আবেদনই করতে পারছি না। ওই তিনটি শিবিরে আমরা যে আবেদন করেছি, সেই নথি আমাদের কাছে প্রশাসন দেয়নি। ফলে প্রশাসনের কাছে দরবার করেও লাভ হচ্ছে না।’’ মাউদুদার প্রশ্ন, আবেদন করেও স্বাস্থ্যসাথী কার্ড যদি না-ই মেলে, তবে ফি বছর দুয়ারে সরকার শিবির করে লাভ কি?
একই অনুযোগ সাতঘরিয়া মধ্যপাড়ার বধূ রুনা বিবিরও। তিনিও বলেন, ‘‘তিনবার দুয়ারে সরকার শিবিরে গিয়ে আবেদন করেও স্বাস্থ্যসাথী কার্ড পাইনি।’’ সাতঘরিয়া গ্রামের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘‘শুধু এই মহিলারাই নয়, নরহাট্টা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রচুর মহিলা দুয়ারের সরকার শিবিরে আবেদন করে এখনও স্বাস্থ্যসাথী কার্ড পাননি।’’ ইংরেজবাজার ব্লকের বিডিও সৌগত চৌধুরী বলেন, ‘‘আবেদন করেও কেন স্বাস্থ্যসাথী কার্ড তাঁরা পাননি, তা খতিয়ে দেখা হবে।’’
প্রশাসন সূত্রে অবশ্য খবর, স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের জন্য দুয়ারে সরকার শিবিরে আসা বেশ কিছু আবেদনপত্রের আইডি অনুমোদন হয়ে রয়েছে। কিন্তু উপভোক্তার ছবি তোলার যন্ত্র রাজ্যস্তর থেকে ব্লকে না পাঠানোয় প্রচুর স্বাস্থ্যসাথী কার্ড বিলি থমকে আছে। তবে ওই তালিকায় সংশ্লিষ্ট নামগুলি আছে কি না তা অবশ্য জানাতে পারেনি ওই সূত্র।