ধুলো: সার্কিট বেঞ্চের অন্দর। নিজস্ব চিত্র
আগামী ৯ মার্চ জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। তার দু’দিন বাদে অর্থাৎ ১১ মার্চ থেকে বেঞ্চ চালু হওয়ার কথা, জানানো হয়েছে হাইকোর্ট থেকে। প্রশাসন সূত্রে খবর, তার আগে ফেব্রুয়ারির চতুর্থ সপ্তাহের মধ্যে সার্কিট বেঞ্চের অস্থায়ী যাবতীয় পরিকাঠামো বিচারবিভাগকে হস্তান্তর করার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।
জেলা প্রশাসন সূত্রে বলা হয়েছে, বর্তমানে ভবনটি যে অবস্থায় আছে, তাকে নতুনের মতো করে বিচারবিভাগের হাতে তুলে দিতে এই সময়টুকু প্রয়োজন। প্রশাসনের মতে, বড় কাজ বিশেষ বাকি নেই। আসল কাজ হল, ধুলো সাফ করে ছোটখাট কিছু মেরামতি।
গত পাঁচ মাস ধরে তালাবন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে সার্কিট বেঞ্চের অস্থায়ী ভবনটি। কেমন অবস্থা তার অন্দরে?
জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশন লাগোয়া বেঞ্চের অস্থায়ী ভবনের মূল দরজা থেকেই পুলিশ পাহারা। সম্প্রতি ভবনের হাল-হকিকত জানতে ভিতরে গিয়েছিলেন জেলা প্রশাসনের কয়েক জন আধিকারিক এবং কর্মী। পরিদর্শনকারী দলের দাবি, তিনতলা বাড়ির প্রতিটি করিডর এবং সিঁড়িতে পুরু ধুলোর স্তর জমেছে। মার্বেল বসানো সাদা মেঝে কোথাও কোথাও কোণ থেকে কালো হয়ে গিয়েছে বলেও দাবি করলেন কেউ কেউ। এজলাস ভবনের দরজা খোলা হয়নি এত দিন। সেগুলির ভিতরে কী অবস্থা, তা নিয়ে উদ্বেগে সরকারি আধিকারিকরা। একাংশের দাবি, টানা পাঁচ মাস ব্যবহার না হলে যে কোনও বাড়ির যা দশা হতে পারে, সার্কিট বেঞ্চের ভবনেরও তেমনিই হাল।
একতলা এবং দোতলা মিলিয়ে চারটি এজলাস রয়েছে ভবনে। ওই ভবনেই রয়েছে বিচারপতিদের চেম্বার, গ্রন্থাগার, ভিডিয়ো কনফারেন্সের ঘর ও হাইকোর্টের কয়েকটি অফিস। সব ক’টিই বাতানুকূল। শীততাপ নিয়ন্ত্রণের যন্ত্রের যে অংশ বাইরের দিকে রয়েছে, সেখানে পাখি বাসা করেছে বলে দাবি করেছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। একটি ঘরের ভিতরে বাতানুকূল যন্ত্রের মধ্যে পোকার বাসা এবং ডিমও দেখেছেন সরকারি কর্তারা। কাঠের পালিশ করা আসবাবগুলিতেও ধুলো জমেছে। সেগুলি ফের পালিশ করাতে হবে বলে দাবি সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের। ভবনটি ব্যবহারের উপযোগী করে তুলতে তাই কিছু দিন সময় লাগবে, জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
প্রশাসনের একটি সূত্রের মতে, পাঁচ মাস বন্ধ হয়ে থাকলে একটি বাড়ির যা হতে পারে, এ ক্ষেত্রে তা-ই হয়েছে। পূর্ত দফতরের এক বাস্তুকারের কথায়, “একটা বাড়ি পাঁচ মাস ধরে ব্যবহার হচ্ছে না, তার ফলে নানা সমস্যা হতে পারে। তবে সেগুলি খুব একটা বড় কিছু নয়। কয়েক দিন সময় পেলেই যথাযথ পর্যায়ে নিয়ে আসা যাবে।”
জেলাশাসক শিল্পা গৌরীসারিয়া শনিবার বলেন, ‘‘যত দ্রুত সম্ভব ভবনটি সাফাইয়ের কাজ শুরু হবে।’’ প্রশাসনের একটি সূত্রের দাবি, রবিবার বা খুব বেশি হলে সোমবার থেকেই এই কাজ শুরু হবে।