ছড়া বেঁধে সচেতনতার প্রচার শুরু

লিচুর মরসুম শুরু হতেই গ্রামবাসীদের সচেতন করতে রীতিমতো ছড়া বেঁধে প্রচারে নামল জেলা প্রশাসন। গত তিন বছরই লিচুর মরসুমে একাধিক শিশুর মৃত্যু হয়েছে মালদহ জেলায়।

Advertisement

অভিজিৎ সাহা

মালদহ শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৭ ০২:০৪
Share:

লিচুর মরসুম শুরু হতেই গ্রামবাসীদের সচেতন করতে রীতিমতো ছড়া বেঁধে প্রচারে নামল জেলা প্রশাসন।

Advertisement

গত তিন বছরই লিচুর মরসুমে একাধিক শিশুর মৃত্যু হয়েছে মালদহ জেলায়। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৪ সালে কালিয়াচকের ৩টি ব্লকে মোট ৬৭ জন শিশু অসুস্থ হয়েছিল। মৃত্যু হয়েছিল ৩২ জনের। ২০১৫ সালে অসুস্থ ২০ জন শিশুর মধ্যে চার জনের মৃত্যু হয়। ২০১৬ সালে ৪১ জন অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। মৃত্যু হয় চার জনের।

খিঁচুনি দিয়ে জ্বর ও বমির উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হয়েছিল ওই শিশুরা। প্রত্যেকের বয়স ছিল তিন থেকে ছয়ের মধ্যে। প্রথম দিকে রোগের কারণ বুঝতে হিমশিম খেতে হয়েছিল চিকিৎসকদের। পরবর্তীতে শিশু মৃত্যুর কারণ নিয়ে তদন্ত শুরু হয়। স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘কাঁচা লিচুতে হাইপোগ্লোসেমিক নামে এক ধরণের উপাদান থাকে। যা শরীরে শর্করার পরিমাণ কমিয়ে দেয়। আক্রান্ত শিশুরা খালি পেটে কাঁচা লিচু খেয়ে ফেলায় শরীরে শর্করার পরিমাণ কমে গিয়ে অচৈতন্য হয়ে পড়েছিল। জ্বর, বমি ও খিঁচুনির উপসর্গ ছিল তাঁদের।

Advertisement

তাই এ বার মরসুমের শুরু থেকেই প্রচারে জোর দিচ্ছে উদ্যান পালন ও স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। ‘শিশু খাবে লিচু, নিয়ম মেনে কিছু।’ চলতি সপ্তাহে এমনই স্লোগান লেখা ফেস্টুন, ব্যানার ঝোলানো হবে লিচু বাগানগুলিতে। একই সঙ্গে লিফলেট বিলির প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পৃথক বিভাগও চালু করা হয়েছে। প্রচারে জোর দেওয়ায় লিচুর মরসুমে শিশু মৃত্যুর হার কমছে বলে দাবি উদ্যান পালন ও স্বাস্থ্য দফতরের।

উদ্যান পালন দফতর সূ্ত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় মোট ১২ হাজার হেক্টর জমিতে লিচু চাষ হয়। ৭০ শতাংশ উৎপাদন হয় কালিয়াচক ১, ২ ও ৩ নম্বর ব্লকে। উদ্যান পালন দফতরের সহ অধিকর্তা রাহুল চক্রবতী বলেন, ‘‘১২ হাজার লিফলেট ছাপানো হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে যৌথভাবে প্রচারে নামা হয়েছে।’’ স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিটি গ্রামীণ হাসপাতালে অক্সিজেন সিলিন্ডার, গ্লুকোজ মাপার যন্ত্র সহ প্রয়োজনীয় ওষুধ রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালেও পৃথক বিভাগ তৈরি করা হয়েছে। খালি পেটে শিশুরা যাতে কখনও কাঁচা লিচু না খায় সেই জন্য আশা কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার শুরু করেছেন বলে জানিয়েছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দিলীপ কুমার মণ্ডল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement