—প্রতীকী চিত্র।
উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় অ্যাডিনোভাইরাসের সংক্রমণ ঘটছে। তবে সেগুলি অ্যাডিনোর মারাত্মক প্রজাতি ‘বি ৭/৩’ কি না, তা নিয়ে এখনও কোনও পরীক্ষানিরীক্ষা হয়নি। অ্যাডিনোভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে রাজ্যকে ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ’ (আইসিএমআর) সতর্ক করেছে। তাই বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর শুরু করেছে স্বাস্থ্য দফতর। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে রেসপিরেটরি ভাইরাসের যে ‘প্যানেল টেস্ট’ হয় তাতে অ্যাডিনোভাইরাসের পরীক্ষা ব্যবস্থাও রয়েছে। উত্তরবঙ্গের জেলা থেকে সম্প্রতি পাঠানো কিছু নমুনা পরীক্ষা করে, অ্যাডিনোভাইরাস চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে তা কোন প্রজাতির তা নিশ্চিত হতে ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজি’-তে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মাইক্রোবায়োলজির প্রধান তথা ‘ভাইরাল রিসার্চ অ্যান্ড ডায়গনস্টিক ল্যাবরেটরি’র দায়িত্বে থাকা অরুণাভ সরকার বলেন, ‘‘অ্যাডিনোভাইরাস সংক্রমণ পাওয়া গিয়েছে। সেটা কিছু নতুন নয়। তবে কী ধরনের প্রজাতি তা জানা যায়নি। এখানে সে পরীক্ষার ব্যবস্থা নেই। তাই নমুনাগুলো নির্দিষ্ট জায়গায় পাঠানো হবে।’’ কোচবিহার থেকে উত্তর দিনাজপুর— মোট ছ’টি জেলার নমুনা উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে পাঠানো হয়।
সর্দি, কাশি জ্বর নিয়ে এখনই শিশু-কিশোরদের মধ্যে খুব বেশ সংক্রমণ এখনও নজরে আসেনি। বরং, শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে শিশু বিভাগে এ ধরনের উপসর্গ নিয়ে কম রোগী আসছে বলে হাসপাতালের একটি সূত্রে খবর। তবে অ্যাডিনোভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল ও জেলার অন্য হাসপাতালগুলিতে শিশুদের ভিড় দেখা যাচ্ছে বলে দাবি। জলপাইগুড়ি জেলা স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, এখনও পর্যন্ত জেলায় অ্যাডিনোভাইরাসে আক্রান্তের কোনও খবর নেই। জলপাইগুড়ি মেডিক্যালের ল্যাবরেটরিতে বা জেলার অন্যত্র কোনও সরকারি জায়গায় অ্যাডিনোভাইরাস পরীক্ষার কোনও ব্যবস্থাও নেই বলে মেডিক্যাল সূত্রের খবর। জেলা থেকে নমুনা উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে পাঠানো হয়। প্রয়োজনে, কখনও নমুনা সংগ্রহ করে কলকাতায় পাঠানোও হয় বলেও জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর। সে ক্ষেত্রে নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পেতেও দেরি হয় বলে দাবি চিকিৎসকদের। তবে জেলায় হাতে গোনা দু’-একটি বেসরকারি প্যাথলজিতে এই পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকলেও সেই ক্ষেত্রে খরচ যথেষ্টই বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের।
অ্যাডিনোভাইরাস ঘটিত কনজাংটিভাইটিসে আক্রান্তদের সংখ্যাও এই সময়ে বাড়ার যথেষ্টই সম্ভাবনা থাকে। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ নিমাই দাস বিশ্বাস বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত অ্যাডিনোভাইরাসে আক্রান্ত কোনও শিশুর খোঁজ পাওয়া যায়নি। চোখ লাল হয়ে যাওয়া, গ্লান্ড ফুলে যাওয়া, সর্দি-কাশি-জ্বর হলেই অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চিকিৎসা করাতে হবে। কনজাংটিভাইটিসে আক্রান্তদের থেকে অবশ্যই দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।’’ মেডিক্যালের সুপার কল্যাণ খান বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত অ্যাডিনোভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে রাজ্যের তরফে আমাদের কোনও সতর্কতা জারি করা হয়নি। তবে আমরা মেডিক্যালের জেলা সদর হাসপাতালের শিশু বিভাগে চিকিৎসা পরিষেবায় জোর দিতে
প্রস্তুতি নিয়েছি।’’