ঘর: নতুন বাড়ির সামনে পবন ছেত্রী ও তাঁর মেয়ে। নিজস্ব চিত্র
ছোট্ট মেয়েটি তাঁকে চেনে না। নামও কোনওদিন শোনেনি। তার শ্রমিক বাবাও জানতেন না, কে এই ব্যক্তি। তবে মাথা গোঁজার জন্য ভাঙা দরমার ঘরটা ভেঙে যেদিন নতুন দেওয়াল উঠতে শুরু করল সেদিন থেকেই বাবা-মেয়ের ‘পরিচয়ে’র শুরু সেই অদেখা ব্যক্তির। তিনি বলিউডের অভিনেতা সোনু সুদ। তাঁরই আর্থিক সাহায্যে পাকা ঘর পেলেন পবন ছেত্রী ও তাঁর মেয়ে কৃষ্টি।
জলপাইগুড়ি জেলার লুকসান চা বাগান এলাকার ভুট্টাবাড়িতে হতদরিদ্র সংসার পবনের। স্ত্রী নেই। মেয়ে কৃষ্টি চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। পবন ছেত্রী পরিযায়ী শ্রমিক। অসমে কাজ করতেন। কাজ হারিয়ে বাড়ি ফিরেছেন তিনি। কিন্তু বাড়ি ফিরেই সংসারের টানাটানির পাশাপাশি অন্য এক চিন্তা। দরমার দেওয়ালের জীর্ণ ঘরে আর থাকা যায় না। কিন্তু নতুন করে ঘর তৈরির টাকাও তাঁর হাতে নেই। বাবার এই দুর্ভাবনা কথায় কথায় পাড়ারই এক তরুণী সোনাল সিংহকে বলেছিল ছোট্ট কৃষ্টি। সোনাল রাজস্থানের কোটায় চাকরির প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। বাইরে থাকার সুবাদে করোনা আবহে অভিনেতা সোনুর সাম্প্রতিক কিছু মানবিক উদ্যোগের খবর সোনালেরও কানে এসেছিল। সেটা মনে রেখেই সোনাল নিজেই উদ্যোগী হয়ে সোনুর টুইটার হ্যান্ডেলে পবনের পরিবারের জন্য আর্থিক সাহায্য প্রার্থনা করেন। টুইটার দেখে সোনু সাহায্যের আশ্বাস দেন। এরপর সোনুর তরফে গত তিন সপ্তাহ আগে আর্থিক সাহায্য আসে। টাকার অঙ্ক সম্পূর্ণ গোপন রাখার অনুরোধও করা হয় সোনুর তরফে।
সেই টাকায় পাকা দেওয়াল ও টিনের ছাউনি দিয়ে একটি ঘর ও বারান্দা তৈরি করা হয়। শনিবার দুপুরে সেই বাড়ির গৃহপ্রবেশ হল। বাড়ির নাম রাখা হয়েছে ‘সোনু সুদ নিবাস’। পবন বলেন, ‘‘সোনু সুদের নাম কখনও শুনিনি। কিন্তু আমার সংসারের পাশে যেন ঈশ্বর হয়ে এলেন তিনি। তাঁকে আমার অসীম কৃতজ্ঞতা।’’