হাসপাতালে আহত রেজ্জাক হোসেন। —নিজস্ব চিত্র।
জোট প্রার্থীর সমর্থনে আয়োজিত পথসভায় যোগ দেওয়ায় সিপিএম সমর্থক বাবা-ছেলেকে মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের একদল সমর্থকের বিরুদ্ধে। বুধবার রাতে কোচবিহার কোতোয়ালি থানার ঘুঘুমারি এলাকায় ওই ঘটনা ঘটে।
পুলিশ সূত্রের খবর, কোচবিহার জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে মজর আলি ও তাঁর ছেলে রেজ্জাক হোসেনের। তাঁদের বাড়ি হাওয়ারগাড়ি গ্রামে। জোট শিবিরের অভিযোগ, বুধবার রাতে ঘুঘুমারির পুলেরপাড় এলাকায় কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী দেবাশিস বণিকের সমর্থনে একটি পথসভা হয়। ওই সভায় দু’জনেই উপস্থিত ছিলেন। রাত ন’টা নাগাদ বাড়ি ফেরার সময় হাওয়ারগাড়ির কাছে রাস্তায় অপেক্ষা করে থাকা তৃণমূল সমর্থকরা ওই দু’জনের ওপর চড়াও হন। লাঠিসোটা দিয়ে দু’জনকে বেধড়ক মারধর করা হয়। গোলমালের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।
কোচবিহারের পুলিশ সুপার সুনীল যাদব বলেন, “ওই সভাস্থলে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মীরা মারধরের অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে যায়। তবে সেখানে কাউকে পাওয়া যায়নি। প্রাথমিকভাবে অভিযোগকারীরা পুলিশকে ৪ জনের নাম জানিয়েছেন। সেটা ভিডিও রেকর্ডিং করা হয়েছে। পরে অবশ্য একটি লিখিত অভিযোগও জমা পড়েছে। অভিযুক্তরা পলাতক। তাদের ধরা হবেই। তল্লাশি হচ্ছে।” এদিন রেজ্জাক বলেন, “ সভা থেকে ফেরার সময় আচমকা হামলার মুখে পড়ে ঘাবড়ে যাই। বাবাকে ও আমাকে তৃণমূলের লোকেরা মারধর শুরু করে। এখনও শরীরে যন্ত্রণা রয়েছে। বরাতজোরে জঙ্গলে লুকিয়ে প্রাণে বেঁচেছি। ঘটনার পরে পুলিশকে কয়েকজনের নামও বলেছি।”
সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য মহানন্দ সাহা বলেন, “জোটের সভায় মানুষের ঢল দেখে তৃণমূল দিশাহারা হয়ে পড়েছে। সেইজন্য জেলাজুড়ে সন্ত্রাস হচ্ছে। সভা ফেরত বাবা-ছেলের ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা চালান হয়েছে। ১৭ জনের নামে পুলিশে অভিযোগ করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের কাছেও বিষয়টি জানান হয়েছে।”
এই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়ে তৃণমূল অবশ্য দাবি করেছে, ওই ঘটনা বামফ্রন্টের আভ্যন্তরীণ কোন্দলের জের। তৃণমূলের কোচবিহার ১ ব্লক সভাপতি খোকন মিঁয়া বলেন, “ওই এলাকায় দীর্ঘদিন ধরেই সিপিএম ও ফরওয়ার্ড ব্লকের ঠান্ডা লড়াই চলছে। সেই পুরানো তিক্ততাকে কেন্দ্র করে সভা ফেরত ফ্রণ্ট সমর্থকদের গোলমাল হয়েছে বলে শুনেছি। তৃণমূলের কেউ গোলমালে জড়িত নয়।” তৃণমূলের কোচবিহার জেলা নেতা আবদুল জলিল আহমেদ বলেন, “বামেরা শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে চাইছে। ওই ঘটনা বাম শরিকদের গন্ডগোলের জের।”