এই মুহূর্তে তাঁরা যেন কোনও ভাবেই ইসলামপুর ছেড়ে না যান। এই মর্মে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে তাঁরা এসএমএসে ‘বার্তা’ পেয়েছেন বলে দাড়িভিট স্কুলের শিক্ষকদের একাংশ রবিবার জানিয়েছেন।
জানা গিয়েছে, মহকুমা প্রশাসন থেকে প্রধান শিক্ষককে সহ-শিক্ষকদের এই বার্তা দেওয়ার জন্য মৌখিক ভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে প্রকাশ্যে কেউই বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চাননি। তবে ঘটনাটি নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। শিক্ষকদের আদৌ এই রকম কোনও নির্দেশ দেওয়া যায় কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। মহকুমাশাসক মণীশ মিত্র জানান, এ বিষয়ে তিনি কোনও নির্দেশ দেননি। দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অনিল মণ্ডল কোনও মন্তব্য করতে চাননি। শুধু বলেছেন, ‘‘এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।’’
তবে মহকুমাশাসক জানান, এ দিন দাড়িভিট-কাণ্ডে নিহতদের কয়েকজন নিকটাত্মীয় তাঁর কাছে এসেছিলেন স্কুল খোলার ব্যাপারে আলোচনা করতে। ১০ নভেম্বর স্কুল খোলা যাবে বলে তাঁরা আশ্বাসও দিয়ে গিয়েছেন বলে তিনি জানান। তবে নিহত রাজেশ সরকারের বাবা নীলকমল সরকার জানান, তাঁদের কোনও আত্মীয় মহকুমাশাসকের সঙ্গে দেখা করতে যাননি।
এ দিন শিলিগুড়িতে দলীয় কর্মসূচিতে গিয়ে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘দাঁড়িভিটে বাংলার শিক্ষক চেয়েছিল ছাত্রছাত্রীরা। পাঠানো হয় উর্দুর শিক্ষক। লোকজন খেপে আছেন। সে কারণেই মন্ত্রী-আমলারা এলাকায় যেতে পর্যন্ত পারছেন না। কেন সব দলকে ডেকে এখনও বৈঠক করা হচ্ছে না? সেখানে স্কুল খোলা যাচ্ছে না। শিক্ষকেরা যেতে পারছেন না। ছাত্রছাত্রীরা পড়তে চায়। আমরা চাই স্কুল খুলুক।’’
তবে, ইসলামপুরের বিধায়ক কানাইয়ালাল আগরওয়াল বলেন, ‘‘৮ নভেম্বর সর্বদলীয় বৈঠক করবে প্রশাসন। মহকুমাশাসক এ দিন ফোনে আমাকে জানিয়েছেন।’’ এ দিন বিধায়ক দাড়িভিটে গিয়ে সেখানকার বাজারে তিনি স্থানীয় বাসিন্দা এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি আরও জানান, এলাকার বাসিন্দাদের বোঝানো হয়েছে, যাতে তাঁরা স্কুল খুলতে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন।
শিক্ষকদের একাংশ জানিয়েছেন, প্রশাসনের তরফে তাঁদের নিয়ে ফের বৈঠকে বসার কথা রয়েছে। দাড়িভিট-কাণ্ডের পর দেড় মাস কেটে গিয়েছে। ঘটনার পর থেকেই স্কুল বন্ধ। ঘটনার সিবিআই তদন্ত ছাড়া স্কুল খুলতে দিতে রাজি নন নিহতের পরিবারের লোকেরা।
এমনকী, ওই ঘটনার গ্রেফতার হওয়া গ্রামবাসীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিও তুলেছেন তাঁরা। স্কুলের প্রশাসকের দায়িত্ব পেয়ে শনিবার মহকুমাশাসক নিহতদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে গেলেও নিহতদের পরিবারের তরফে তাকে এ কথা জানানো হয়।
জানা গিয়েছে, আগামী ১৫ নভেম্বর থেকে সমস্ত স্কুলগুলো টেস্ট পরীক্ষা। দাড়িভিট স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা টেস্ট পরীক্ষা দিতে পারবে কিনা সেটাই এখন বড় কথা।