প্রতীকী ছবি।
নতুন বছরের গোড়ায় দলীয় সংগঠন এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে নেতাদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করতে শিলিগুড়ি আসার কথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরের (পিকে)। কয়েক মাস আগে দু’জনই শিলিগুড়িতে এসে দু’দিন দলীয় বৈঠক করেছিলেন। দলীয় সূত্রের খবর, সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে ৪ জানুয়ারি অভিষেক এবং পিকে শিলিগুড়ি আসছেন। চা বাগান, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ির নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁদের বৈঠক হওয়ার কথা। সেই সঙ্গে এ বার পাহাড়ের বিবদমান দু’পক্ষের সঙ্গেও তৃণমূল নেতৃত্বকে নিয়ে পিকে বসতে পারেন বলে দলের অন্দরে আলোচনা চলছে।
শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। আলিপুরদুয়ার, নাগরাকাটা, মালদহের বর্তমান এবং প্রাক্তন জনপ্রতিনিধিরা ছাড়াও শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি এবং উত্তর দিনাজপুরের স্থানীয় স্তরের যুব নেতাদের কেউ কেউ শাসকদলের সঙ্গ ছেড়েছেন। দশরথ তিরকে, শুক্রা মুন্ডা, মিহির গোস্বামীর মতো বিধায়ক, প্রাক্তন সাংসদেরা গেরুয়া শিবিরে। আবার শিলিগুড়িতে শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ তিন যুব নেতা বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। জলপাইগুড়িতে এক যুব নেতা দল ছাড়ার কথা জানিয়েছেন। এই অবস্থায় উত্তরবঙ্গের সংগঠনে নজর দিতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সফরের পর আরেক দফায় শিলিগুড়ি আসছেন অভিষেক-পিকে।
তৃণমূলের উত্তরবঙ্গের অন্যতম এক শীর্ষ নেতার কথায়, ‘‘সংখ্যালঘু ভোট ব্যাঙ্ক অটুট রেখে রাজবংশী, আদিবাসী, গোর্খাদের নিজেদের দিকে রাখাটাই এখন উত্তরে প্রথম কাজ। সেখানে কোচবিহার, দক্ষিণ দিনাজপুর, জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি মতো এলাকা নিয়ে চিন্তা বেড়েছে। পুরো বিষয়টি পর্যালোচনা করতেই কলকাতা থেকে নেতারা আসছেন।’’
তৃণমূল সূত্রের খবর, নতুন বছরের শুরুতেই শুভেন্দু অধিকারী জঙ্গলমহল, দক্ষিণবঙ্গে জেলা সফর শুরু করবেন। তার পরে তিনি উত্তরবঙ্গে আসতে পারেন। প্রতিটি জেলায় তাঁর অনুগামীরা অনেকেই এখনও তৃণমূলে আছেন। তাঁদের সঙ্গে তিনি নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। জেলা সফরে আসার পর প্রত্যেক জেলায় আলাদা করে যোগদান কর্মসূচি হবে। সেখানে বহু লোকজনের দল ছাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই পরিস্থিতি ঠেকাতেই আরও অভিষেক, পিকে উত্তরবঙ্গ সফর। পাহাড়ের মোর্চার বিবদমান দুই পক্ষের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সহবস্থান করানোটাও অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। বিজেপি যাতে কোনও পক্ষের দিকে হাত বাড়াতে না পারে, সেই দিকটা খেয়াল রাখতেই বিমল গুরুং এবং বিনয় তামাংদের সঙ্গে কলকাতা থেকে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।
তেমনিই, গেরুয়া শিবিরের চা বাগান এলাকার এক নেতার সঙ্গেও তৃণমূলের আলোচনা চলছে। সেই আলোচনা ফলপ্রসু হলে তিনি দলও ছাড়তে পারেন। আবার যাঁরা শুভেন্দুর সঙ্গে যাবেন ধরেই নেওয়া হচ্ছে, তাঁদের তালিকা তৈরি করে সেখানে বিকল্প কী করা যায়, সেই কাজও শুরু করা হয়েছে।
একই সঙ্গে কোচবিহার, শিলিগুড়ি বা জলপাইগুড়িতে যে সব বেসুরো নেতা আছেন, তাঁদের সঙ্গেও দল কথা বলছে। দলের এক প্রবীণ নেতার কথায়, দলের ভাঙন যত দূর সম্ভব ঠেকিয়ে সংগঠনের পরিস্থিতি ঠিক করার জন্য অভিষেক এবং পিকে আসছেন। তেমনিই, কোন্দল বন্ধ করতে কিছু জায়গায় দায়িত্ব পরিবর্তনও তাঁরা করতে পারেন।