আক্রান্ত শিক্ষক সুদীপ টুডু। —নিজস্ব চিত্র।
সাইকেল চোর সন্দেহে শিক্ষককে গণধোলাই দেওয়ার অভিযোগ উঠল ইংরেজবাজার পুরসভার প্রাক্তন এক তৃণমূল কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। মালদহের মালঞ্চপল্লির তিন নম্বর ওয়ার্ডের এই ঘটনায় পরিতোষ চৌধুরী নামে তৃণমূলের ওই নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে ইংরেজবাজার থানায়। বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজাও।
পুলিশ সুত্রে জানা গিয়েছে, গণধোলাইয়ে আহতের নাম সুদীপ টুডু। তিনি হবিবপুর থানার মানিকড়া বিদ্যালয়ের শিক্ষক। সুদীপ জানিয়েছেন, রবিবার মালঞ্চপল্লি এলাকায় তাঁর আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফেরার পথেই হামলার মুখে পড়েন। সুদীপ বলেন, ‘‘ওই কাউন্সিলর আচমকা এসে আমাকে মারধর করতে শুরু করেন। সেই সময় এক জন আমার পাশ দিয়ে চলে যায়। হয়তো সে-ই সাইকেল চোর। অথচ তাকে না ধরে আমাকে মারধর করা হয়। কাউন্সিলরই আমাকে ‘চোর’ বলে সম্বোধন করেন। ওঁর নাম আমি জানি না। আমাকে যখন মারধর করা হচ্ছে, তখন ওঁকে অনেকে কাউন্সিলর বলে সম্বোধন করছিলেন।’’
সুদীপের আত্মীয়রা তাঁকে উদ্ধার করেন। মাথায় এবং শরীরের একাধিক জায়গায় চোট নিয়ে তিনি এখন মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। ওই কাণ্ডে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে ইংরজবাজার থানায় অভিযোগ দায়েরও হয়েছে। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই সরব হয়েছে বিজেপি-ও। বিজেপি-র জেলা সভাপতি গোবিন্দ মণ্ডল বলেন, ‘‘তৃণমূল দল সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছে। ওরা শিক্ষককে পর্যন্ত মারধর করছে। অবিলম্বে ওই নেতাকে গ্রেফতার করা উচিত।’’
এ নিয়ে তৃণমূল নেতা কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী বলেন, ‘‘পরিতোষ চৌধুরী সিপিএম থেকে জিতে কাউন্সিলর হয়েছিলেন। উনি তৃণমূলের কেউ নন। থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পুলিশ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।’’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তৃণমূলের অন্য এক নেতা বলেন, ‘‘পরিতোষ সিপিএমের টিকিটেই পুরভোটে জিতে কাউন্সিলর হয়েছিলেন। পরে অন্য কয়েক জন সিপিএম কাউন্সিলরের সঙ্গে তিনিও তৃণমূলে যোগ দেন। তার পর আর পুরনির্বাচন হয়নি।’’
যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ সেই তৃণমূল নেতা পরিতোষের দাবি, ‘‘আমিই ওই শিক্ষককে উদ্ধার করে নিয়ে এসেছি। তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁর শরীরে একটু কেটে গিয়েছে। তিনি হাসপাতালে ভর্তি। আমি তাঁকে দেখতেও গিয়েছিলাম। এ জন্য আমি অনুতপ্ত। ক্ষমা চাইছি। ছেলেটি নিজেই নার্ভাস হয়ে গিয়েছিল। আমি সমস্যাটার কী ভাবে সমাধান করা যায় তার চেষ্টা করছি।’’