jalpaiguri

Jalpaiguri: স্কুল বন্ধ, শুঁটকি বিক্রি করছে পুকাই

সকাল থেকে সন্ধে মাছ বিক্রি করে জলপাইগুড়ি জেলা স্কুলের ছাত্র পুকাই দাস।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২২ ০৭:৫৩
Share:

শৈশব: মাচায় শুঁটকি বিক্রি করছে পুকাই।

পুকাইয়ের নিজস্ব দোকান হয়েছে। বাঁশের মাঁচার উপরে। এলাকার লোকজনে এক ডাকে চেনে। শহরতলির পিচ রাস্তার বাঁকে মাচায় নিজে হাতে মাছ সাজায় পুকাই। ভোলা, বাবলা, পয়া, চেলি, চাপলা, সোনামুখি মাছের শুঁটকি। গত বছর লকডাউনের সময়ে দোকানটি তৈরি করে দিয়েছিলেন ওর বাবা। দিনকয়েক আগে যখন সর্বত্র চাউর হয়ে গেল, স্কুল খুলছে, সপ্তম-অষ্টম শ্রেণির ক্লাস শুরু হবে, তখন পুকাই আর দোকানে বসবে না বলেই ঠিক হয়েছিল। স্কুল ইউনিফর্ম নামিয়ে ধোয়া হয়েছিল। স্কুল ফের বন্ধ। ইউনিফর্মও তুলে রাখা হয়েছে। সপ্তম শ্রেণির পুকাই আবার শুঁটকির দোকানে।

Advertisement

সকাল থেকে সন্ধে মাছ বিক্রি করে জলপাইগুড়ি জেলা স্কুলের ছাত্র পুকাই দাস। সে টের পাচ্ছে, দিন দিন তার হাতের লেখা খারাপ হচ্ছে। তবে হাতে গুনে মাছের দাম হিসেব করতে ইদানীং সে ভালই পারছে।

ইন্দিরা কলোনির বাসিন্দা পুকাইয়ের স্মার্টফোন আছে। কিন্তু সব ক্লাস অনলাইনে হয় না। একজন গৃহশিক্ষকের কাছে পড়তে যায়। কিন্তু ওর মা মামণি দাস বলেন, “স্কুলে না গেলে কি আর ভাল পড়াশোনা হয়? ওর বাবা কাঠের কাজের সূত্রে বাইরে যায়। পুকাই দোকান সামলায়। স্কুল খুললে নিশ্চয় পাঠাব।”

Advertisement

স্কুলের পড়া অনেকই ভুলেছে পুকাই। নিজেই বলে, “অনেকদিন লিখি না বলে হাতের লেখা খুব খারাপ হয়ে গিয়েছে।” পুকাইয়ের বাবা গৌতম দাস কাঠের কাজ করেন। গত বছর লকডাউনের সময়ে তাঁর কাজ হারিয়েছিল। সেই সময় শুঁটকি মাছ বিক্রি শুরু করেছিলেন তিনি। তার পর জনজীবন ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে থাকায় আবার কাঠের কাজ পেতে শুরু করেন। এ দিকে মাছ বিক্রি ভাল হওয়ায় বাঁশের মাঁচা তৈরি করে দোকান বানালেন। সেই দোকানে ছেলেকে বসালেন। কারণ, পুকাইয়ের স্কুল বন্ধ। তাই বাড়িতে পড়াশোনার চাপ নেই। পুকাই বলে, “অনলাইন ক্লাসে কিছু বোঝা যায় না। বাড়িতে নিজে পড়ে সব পড়া বুঝতেও পারি না।”

পুকাই বলল, “সারাদিন বসে থাকলে বেশি বিক্রি হয়। কোনওদিন সব মাছ শেষ হয়ে যায়। একদিন তো আটশো টাকারও বিক্রি করেছি।” ছবি: সন্দীপ পাল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement