প্রতীকী চিত্র
সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রকে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ উঠল বেসরকারি স্কুলের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে ইংরেজবাজার থানার মিলকি এলাকায় একটি বেসরকারি আবাসিক স্কুলে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে মিলকি এলাকায়। ইংরেজবাজার থানায় ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগও দায়ের হয়। শেষ পর্যন্ত ওই শিক্ষককে আটক করা হয়েছে।
ঘটনা জানাজানি হওয়ার পরে শুক্রবার সকাল থেকে স্কুল ভাঙচুর করেন উত্তেজিত স্থানীয় বাসিন্দা ও অভিভাবকদের একাংশ। এই ঘটনার পর বেশিরভাগ অভিভাবক তাদের ছেলেদের এদিন ছাত্রাবাস থেকে বাড়ি নিয়ে চলে যান। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে স্কুল থেকে পালিয়ে যান অভিযুক্ত শিক্ষক। তত ক্ষণে ঘটনার প্রতিবাদে ও অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেফতারের দাবিতে মিলকিতে মালদহ-মানিকচক রাজ্য সড়ক অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ চলে। সকাল ন’টা থেকে প্রায় এক ঘণ্টা অবরোধ চলে। পুলিশ আলোচনা করে অবরোধ তুলে দেয়।
ইংরেজবাজার ব্লকের মিলকিতে রয়েছে এই বেসরকারি আবাসিক স্কুলটি। পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণির ছাত্ররা সেখানে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ওই স্কুলে মিলকির পাশাপাশি শোভানগর, মাদিয়া, মানিকচকের ছাত্ররা ছাত্রাবাসে থেকে লেখাপড়া করে। স্কুলের ছাত্রদের একাংশের অভিযোগ, অভিযুক্ত ওই শিক্ষক আবাসিক ছাত্রদের কয়েক জনকে যৌন নিগ্রহ করতেন। প্রায় চার মাস ধরে রোজ রাতে ছাত্রদের যৌন নিগ্রহ করা হত। সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রকে নিগ্রহ করা হত বেশি। অন্য ছাত্ররা আপত্তি জানালে তাদের অভিযুক্ত শিক্ষক ক্লাসে আসতে দিতেন না বলেও অভিযোগ। তাঁদের অভিযোগ, স্কুল কর্তৃপক্ষকে সব জানানো হলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
স্কুলের অন্য ছাত্ররাই নির্যাতিত ওই সপ্তম শ্রেণির ছাত্রর পরিবারকে ঘটনাটি জানায়। এ দিন একদল স্থানীয় বাসিন্দা ও অভিভাবকদের একাংশ উত্তেজিত হয়ে স্কুলে ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর করেন। স্কুলের চেয়ার-টেবিল সহ আসবাব ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। পাশাপাশি ওই শিক্ষককে গ্রেফতারের দাবিতে মালদহ-মানিকচক রাজ্য সড়ক অবরোধ করেন বাসিন্দারা। রাস্তায় টায়ারে আগুন ধরিয়ে বিক্ষোভ হয়। পরে পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ ওঠে।
অভিভাবকদের মধ্যে বাচ্চু শেখ বলেন, ‘‘এই আবাসিক স্কুলে নঘরিয়া, শোভানগর, এনায়েতপুরের শিশুরা পড়াশোনা করে থাকে। চার মাস ধরে ছাত্রদের উপরে যৌন নিগ্রহ চালানো হচ্ছে। অথচ স্কুল কর্তৃপক্ষ সব জানার পরেও নীরব।’’ মিলকি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান নিজাম আলি অভিযোগ করে বলেন, ‘‘আবাসিক স্কুলের একজন ছাত্রের উপর এক শিক্ষক ঘৃণ্য নির্যাতন চালাতেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আমরা তার তীব্র প্রতিবাদ জানাই। স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে, ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান হয়েছে। পুলিশকে অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবিও জানিয়েছি আমরা।’’