প্রতীকী ছবি।
পুকুরের ধার থেকে অসুস্থ অবস্থায় সাত বছরের এক কন্যা উদ্ধার হয়েছে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে শোরগোল পড়ছে উত্তর দিনাজপুর জেলায়। ওই শিশুটি মূক ও বধির। মঙ্গলবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে জেলার একটি গ্রামে। পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার করে ইটাহার গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে, শিশুটিকে রায়গঞ্জ মেডিক্যালে ‘রেফার’ করা হয়। সেখানে সে চিকিৎসাধীন। শিশুটির মায়ের দাবি, ওই শিশুটির যৌনাঙ্গ দিয়ে রক্তপাত হয়েছে। শিশুটিকে অপহরণ করে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ বিজেপির। তৃণমূলের দাবি, জেলায় খুন ও ধর্ষণের মিথ্যা অভিযোগ তুলে অশান্তি ছড়ানোই বিজেপির লক্ষ্য। তবে ঘটনায়, পুলিশে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। শিশুটির মা বলেন, ‘‘আমরা আর কী পুলিশে অভিযোগ করব! পুলিশ তো তদন্ত করছেই।’’
রায়গঞ্জ পুলিশ-জেলার সুপার মহম্মদ সানা আখতার বলেন, ‘‘পুলিশে অভিযোগ দায়ের হলে, আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ মেডিক্যালের সহকারী সুপার বিপ্লব হালদার বলেন, ‘‘শারীরিক পরীক্ষার রিপোর্ট না মেলা পর্যন্ত শিশুটির অসুস্থতার কারণ বলা সম্ভব নয়।’’
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই শিশুটির বাবা ভিন্ রাজ্যে শ্রমিকের কাজ করেন। সোমবার সন্ধ্যায়, ওই শিশুটির বাড়ির অদূরে মেলা বসেছিল। শিশুটির মায়ের দাবি, তাঁর নাবালিকা বাড়ি থেকে উধাও হয়ে গিয়েছিল। তাঁরা সোমবার রাতভর খুঁজেও তাকে পাননি। তিনি বলেন, ‘‘মেয়ে সারারাত বৃষ্টির মধ্যে পুকুরের ধারে পড়ে থেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ওর যৌনাঙ্গ থেকে রক্ত বেরোতে দেখেছি।’’
তবে বিজেপির জেলা সম্পাদক সবিতা বর্মণের দাবি, সোমবার সন্ধ্যায় এক ব্যক্তি ওই শিশুটির বাড়িতে যান। তখন শিশুটি এক দিদির সঙ্গে বাড়িতে ছিল। সবিতার দাবি, “ওই ব্যক্তি শিশুটির দিদিকে বিড়ি আনতে পাঠিয়ে শিশুটিকে তুলে নিয়ে গিয়ে পুকুরের ধারে ধর্ষণ করে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে পালায়।’’ বিজেপির জেলা সভাপতি বাসুদেব সরকার বলেন, ‘‘পুলিশ, শিশুটির পরিবারকে ভয় বা প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ না করার জন্য চাপ সৃষ্টি করেছে।’’ তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক অসীম ঘোষ অভিযোগ করেন, উত্তর দিনাজপুরে খুন ও ধর্ষণের মিথ্যা অভিযোগ তুলে রাজনীতি করে অশান্তি ছড়ানোই বিজেপির প্রধান কাজ। অসীম বলেন, “ধর্ষণের অভিযোগ মিথ্যা। তাই বিজেপি পুলিশের কাছে গিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করার সাহস পাচ্ছে না।” বাসুদেবের বক্তব্য, শিশুটির পরিবারের সম্মতি না থাকায়, দলের তরফে এখনও পুলিশে ধর্ষণের অভিযোগ দায়েরকরা হয়নি।
এ দিন দুপুরে বিজেপির মহিলা কর্মীরা রায়গঞ্জ মেডিক্যালের প্রসূতি বিভাগে গিয়ে ওই শিশুটির মায়ের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করেন। কিন্তু নার্স ও নিরাপত্তা রক্ষীরা তাঁদের ওয়ার্ডে ঢুকতে বাধা দেন বলে অভিযোগ। এর পরেই, বিজেপির কর্মীরা পুলিশ ও মেডিক্যালের বিরুদ্ধে ওই শিশুটিকে ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখান। পরে, অবশ্য তাঁরা ওয়ার্ডের বাইরে শিশুটির মায়ের সঙ্গে কথা বলেন।