নজর: চোপড়ার লক্ষ্মীপুরে কড়া নজরদারি পুলিশের। নিজস্ব চিত্র
আর দশটা দিনের মতোই সাত সকালে বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন দোকানে। সোমবার সকাল ১১টা নাগাদ খবর এল শাহিদ গুলিবিদ্ধ। মঙ্গলবার ভোরে আহত ছেলেকে যখন দেখতে যাবেন বলে বেরোচ্ছেন শাহিদের মা আজিনা খাতুন, খবর এল, তাঁর ছেলে আর বেঁচে নেই।
কান্নায় ভেঙে পড়ে গোটা গ্রামই। শাহিদরা ছয় ভাই চার বোন। ভাইদের মধ্যে শাহিদ চতুর্থ। বোনদের বিয়ে হয়েছে। দাদারা কৃষিকাজ করেন। ছোট ভাই পড়াশোনা করছে। পরিবারের সকলের প্রিয় ছিলেন শাহিদ। শাহিদ অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। বাড়িতে অভাব থাকায় তারপরে লক্ষ্মীপুর বাজারের একটি পানের দোকান শুরু করেন। দোকান ভালই চলছিল। ধীরে ধীরে দোকানে অন্য মুদিখানার সামগ্রী রাখা শুরু করেছিলেন।
শাহিদকে নির্বিবাদী ছেলে বলেই চিনতেন সকলে। কারও সঙ্গে ঝগড়া বিবাদ ছিল না। কিন্ত সোমবার পাড়ার ছেলেকে মারধর করছে বলে খবর পেয়ে ছুটে গিয়েছিলেন। মঙ্গলবার রাতে কফিনবন্দি দেহ ফিরে এল।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
শাহিদের মৃত্যুতে গোটা গ্রাম ক্ষোভে ফুঁসছে। আর সেই ক্ষোভ থেকে এলাকা অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। স্থানীয় বাসিন্দা সফিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘শাহিদ এলাকায় যে কোনও বিপদে আপদে সবার পাশে দাঁড়াতেন। সোমবার পাড়ার ছেলে বিপদে পড়েছিল বলে দোকান থেকে ছুটে গিয়েছিল। আর তার জন্য চলে যেত হল অকালে।’’
মঙ্গলবার গোটা গ্রাম ক্ষোভে ফুঁসছে। গ্রামবাসীদের একাংশের অভিযোগ, তৃণমূল বিধায়ক হামিদুর রহমানের মদতের জন্য এলাকায় দুষ্কৃতীদের বাড়বাড়ন্ত। বিধায়ক হামিদুর অবশ্য দাবি করেন, ‘‘এই মৃত্যুর সঙ্গে তৃণমূল জড়িত নয়।’’ জেলার পুলিশ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কার্তিকচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘এলাকায় উত্তেজনা থাকায় পুলিশি টহল দেওয়া হচ্ছে। দুষ্কৃতীদের ধরতে তল্লাশি চলছে।’’ স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, অবিলম্বে শাহিদের খুনিদের গ্রেফতার না করা পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য ব্যবসা বন্ধ রাখবেন।