বাঁ দিক থেকে, ফ্যালকেটেড ডাক এবং রেড-ক্রেস্টেড পোচার্ড। নিজস্ব চিত্র।
পশ্চিমবঙ্গে পরিযায়ী এবং স্থানীয় জলাভূমির পাখিদের নিরাপদ ঠিকানার সন্ধান মিলল। দীর্ঘ গবেষণায় জানা গেল তাদের হাল হকিকত। সৌজন্যে, প্রকৃতি ও বন্যপ্রাণ গবেষণা সংস্থা ‘বম্বে ন্যাচারাল হিস্ট্রি সোসাইটি’ (বিএনএইচএস)। এক দশক ধরে পর্যবেক্ষণ ও অনুসন্ধানের কাজ চালিয়ে এ বিষয়ে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছেন তাঁরা।
বক্সার নারথালি জলাভূমির পক্ষীবৈচিত্র নিয়ে ২০০৯ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত কাজ করেছেন বিএনএইচএস-এর গবেষকেরা। বিভিন্ন মরসুমে ৭৫ বার হয়েছে সমীক্ষার কাজ। বক্সার রাজাভাতখাওয়া শকুন প্রজনন কেন্দ্রে গত দেড় দশক ধরে কর্মরত বিজ্ঞানী সচিন রানাডে ছিলেন ওই গবেষকদলের নেতৃত্বে। সম্প্রতি ‘জার্নাল অফ থ্রেটেনড ট্যাক্সা’-এ প্রকাশিত হয়েছে তাঁদের সেই গবেষণাপত্র।
আনন্দবাজার অনলাইনকে সচিন জানিয়েছেন, ছ’টি প্রজাতির পরিযায়ী হাঁস— গ্যাডওয়াল, নর্দার্ন শোভেলার, নর্দার্ন পিনটেল, কমন টিল, রেড-ক্রেস্টেড পোচার্ড এবং ফেরুজিনাস পোচার্ড এবং চারটি আবাসিক প্রজাতির জলচর— লিটল গ্রেব, লেসার হুইসলিং ডাক, কটন টিল এবং স্পট-বিল্ড ডাক-এর উপস্থিতির উপর ভিত্তি করে হয়েছে সমীক্ষার কাজ। তিনি বলেন, ‘‘আমরা নারথালি জলাভূমিতে ৫০-এর বেশি প্রজাতির জলাভূমির পাখির সন্ধান পেয়েছি।’’
গবেষণাপর্বে তাঁরা নারথালি জলাভূমিতে বিরল ‘ফ্যালকেটেড ডাক’-এর খোঁজ পেয়েছেন বলেও জানিয়েছেন সচিন। সেই সঙ্গে ক্যামেরাবন্দি হয়েছে লেসার হুইসলিং ডাক (ছোট সরাল) প্রজাতির একটি শ্বেতকায় (মেলানিস্টিক) নমুনা। তা ছাড়া, ন’টি বাজ ও ঈগল জাতীয় মাংসাশী পাখির (র্যাপ্টর)-ও সন্ধান মিলেছে নারথালিতে। সেই তালিকায় পরিযায়ী অসপ্রের পাশাপাশি রয়েছে উত্তরবঙ্গের স্থানীয় কিন্তু অল্পচেনা প্রজাতি ‘গ্রে হেডেড ফিশ ঈগল’ও। তবে গবেষণা জানাচ্ছে, কমন মুরহেনের মতো কয়েকটি প্রজাতির সংখ্যা গত এক দশকে কমেছে নারথালিতে।