গজলডোবায় তৈরি নতুন সেতু। উদ্বোধনের অপেক্ষায়। —নিজস্ব চিত্র।
গজলডোবায় অস্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত সিডনি হারবার সেতুর অনুকরণে তৈরি সেতু উদ্বোধনের দোরগোড়ায়। প্রায় ১২০ কোটি টাকায় তৈরি সেতুর রং ও রাস্তার কাজ শেষ হয়েছে। অ্যাপ্রোচ রোডের কাজও শেষের দিকে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্তরবঙ্গ সফরের সময় এটি চালু হতে পারে বলেও শোনা যাচ্ছে। যদিও এই প্রকল্পে জমিদাতাদের একাংশ আশ্বাস মতো ক্ষতিপূরণ না পাওয়ার অভিযোগে রাস্তায় নেমেছেন। সোমবারের পরে, মঙ্গলবারেও জমিদাতা ১৪টি পরিবার এলাকায় বিক্ষোভ দেখায়। তাদের দাবি, সরকার এখনও প্রতিশ্রুতি রাখেনি। এই পরিস্থিতিতে নবান্ন থেকে রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছে।
এলাকায় গিয়ে স্থানীয় বিডিও প্রশান্ত বর্মন এ দিন জমিদাতাদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁদের দাবি মেটানোর আশ্বাস দেন। এই পরিস্থিতি সেতুটি মুখ্যমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন কি না তা এখনও কিছুটা অনিশ্চিত রয়েছে। রাজগঞ্জের বিডিও বলেন, "বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁদের বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিলে আপাতত সমস্যা মিটেছে।"
সরকারি সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর প্রকল্প গজলডোবার ‘ভোরের আলো’ প্রকল্প এলাকায় ঢোকার জন্য সেতুটি তৈরি হয়েছে। ২০১৬ সালের পরে রাজ্য সরকার সেতুটি তৈরি করে পুরনো সেচ দফতর ভবন দিয়ে ঢোকার রাস্তাটি বন্ধ করে দেওয়ার চিন্তাভাবনা শুরু করে। ২০১৯ সাল থেকে সিডনি হারবার সেতুর অনুকরণে ঝুলন্ত সেতুটি তৈরি হয়। এর জন্য তিস্তা ক্যানাল সংলগ্ন ১৪টি পরিবারের কাছ থেকে জমি নেওয়া হয়। মোট দু’টি উড়ালপুলের ন্যায় অ্যাপ্রোচ-সহ সেতুটি তৈরি করতে আনুমানিক ১২০ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। এলাকার বাসিন্দা নির্মল সমাদ্দার, পলাশী সন্ন্যাসীরা জানিয়েছেন, পাট্টা-সহ সমপরিমাণ জমি, বাড়ি তৈরির দেড় লক্ষ টাকা, মন্দির তৈরির কথা বলা হয়। কয়েক জনকে চাকরি এবং দোকানঘর তৈরির কথাও ছিল। শুধু ঘরের জমি দেওয়া হয়েছে। টাকা, চাকরি বা দোকানঘর মেলেনি বলে তাঁদের দাবি।
এর মধ্যে সেতুর কাজ শেষ হয়েছে। তিস্তা ক্যানালের পারের দিকে সেতুটি দু’দিক থেকে জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গত কয়েক দিন ধরে সেতুটিকে ঘিরে পর্যটকদের মধ্যে আকর্ষণ বেড়েছে। তবে ক্ষোভ-বিক্ষোভের মধ্যে সেতুর উদ্বোধন করা নিয়ে জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনও সমস্যায় রয়েছে। নবান্নে এ নিয়ে রিপোর্টও গিয়েছে। জলপাইগুড়ির জেলাশাসক শামা পারভিন বিষয়টি নিয়ে কিছু বলতে চাননি। তবে জেলা প্রশাসনের এক অফিসার বলেন, ‘‘প্রশাসন, পর্যটন দফতর-সহ বিভিন্ন তরফে রিপোর্ট নবান্নে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকেই সব চূড়ান্ত করা হবে। জমিদাতাদের ক্ষোভ-বিক্ষোভের কথা জানানো হয়েছে। সরকার নিশ্চয় দাবিগুলি বিবেচনা করে দেখবে।’’