প্রতীকী ছবি।
বেআইনি জাল মদের কারবারের জেলা স্তরের এক বিজেপি নেতার নাম জড়াল। এই ঘটনায় রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। অভিযুক্ত নেতার নাম আব্দুল জলিল। তিনি বিজেপির উত্তর দিনাজপুরের জেলা সহ সভাপতি।
জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, জাল মদ কারবারের পান্ডা বলে পরিচিত জলিলের বিরুদ্ধে চাকুলিয়া থানার পুলিশ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। অভিযুক্ত জলিল এখনও ধরা পড়েননি। তাঁর খোঁজে তল্লাশি চলছে। সম্প্রতি ডালখোলা এবং চাকুলিয়া থানার পুলিশ প্রচুর জাল বিলিতি মদ বাজেয়াপ্ত করে।
এই কারবারের তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ প্রথমে ওই নেতার ভাই আব্দুল করিমের নামে মামলা শুরু করেছিল। পরে নাম জড়ায় বিজেপির জেলা নেতা জলিলের। ভাইয়ের পরে দাদার নাম জড়িয়ে পড়ার পর স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই পরিবারটি অনেকদিন ধরেই জাল মদের কারবার করে আসছে। ওই এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, জলিলেরা রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে পুলিশকে সন্তুষ্ট রেখে এতদিন এই কারবার চালিয়ে এসেছেন। অথচ প্রশাসন হাত গুটিয়ে থেকেছে। আবগারি দফতরের সঙ্গেও তাঁদের ভাগ-বাঁটোয়ারা আছে বলে অভিযোগ ওই বাসিন্দাদের
ডালখোলার দৌলতপুরের বাসিন্দা অভিযুক্ত জলিলকে পুলিশ এখনও ধরতে না পারায় প্রশ্ন উঠেছে। যদিও পুলিশ জানিয়েছে, জলিলের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। অন্যদিকে, এ দিন ফোনে জলিল দাবি করেন, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মিথ্যা।
এ দিন জলিলের আরও দাবি, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকেই তাঁর নাম পুলিশ জড়িয়েছে। এর পিছনে তৃণমূলের চক্রান্ত রয়েছে। তৃণমূল রাজনৈতিক ভাবে লড়াই করতে না পেরেই তৃণমূল প্রভাব খাটিয়ে তাঁদের নাম জড়িয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, পেশায় পরিবহণ ব্যবসায়ী জলিলের বিরুদ্ধে অভিযোগ, জাল বিলিতি মদ তৈরি করে বিহার ও আশপাশের জেলায় পাচার করতেন। চলতি মাসেই পুলিশ ডালখোলা এবং চাকুলিয়া এলাকা থেকে বিহারের পাচারের আগে প্রায় দেড় কোটি টাকার জাল বিলিতি মদ উদ্ধার করে।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, বিহারে মদ নিষিদ্ধ হওয়ার পর বাংলা বিহার সীমান্তবর্তী এলাকায় জাল মদের কারবার ও কারখানা গজিয়ে ওঠে। তবে জলিলের নাম প্রকাশ্য আসায় বিজেপির মধ্যে চরম অস্বস্তি দেখা দিয়েছে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক, এক বিজেপি নেতা জানান, জলিলদের জাল মদ ব্যবসা করতে বারণ করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা শোনেননি।
২০১১ সালের বিধানসভা ভোটে জলিল করণদিঘি বিধানস ভার প্রার্থী হয়েছিলেন। তৃণমূল ডালখোলা টাউন সভাপতি তনয় দে বলেন, ‘‘বিজেপির মদতেই এমন বাড়বাড়ন্ত জলিল ভাইদের। এই দলের নেতাদের মুখে বড় বড় কথা শোভা পায় না। বিজেপির নেতাদের শুদ্ধকরণ হওয়া দরকার।’’ অবশ্য বিজেপি জেলা সভাপতি নির্মল দাম বলেন, ‘‘দলের কেউ যদি অপরাধ করেন, তাঁর বিরুদ্ধে দল তদন্ত করে উপযুক্ত পদক্ষেপ করবে। পাশাপাশি, দল এটাও দেখবে তৃণমূল চক্রান্ত করে দলের নেতার নাম ফাঁসাচ্ছে কি না। সেক্ষেত্রে তা নিয়ে প্রতিরোধে নামা হবে।’’