ফাইল চিত্র।
কথায় আছে, এক মাঘে শীত যায় না। মাঘের শেষেও স্বমহিমায় শীত। পুরভোটের উত্তাপেও যেন শীতে ‘জবুথবু’ শ্রীকলোনি, কোতুয়ালির কংগ্রেস বাড়ি। দুই বাড়িরই সদর দরজা বন্ধ। অথচ, এক সময় ভোট রাজনীতির ব্যাটন ছিল গনি খান, প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির হাতেই। পুরভোটই হোক কিংবার বিধানসভা কিংবা লোকসভা ভোট। গমগম করতে মালদহের কোতুয়ালি হাভেলি, কালিয়াগঞ্জের দাশমুন্সির ভবন।
এখন দু’জনেই নেই। হাতের ব্যাটন এখন ঘাসফুলে তার ইজ্ঞিত মিলেছে বিধানসভা ভোটে। পুরভোটেও গনি, প্রিয় হীন মালদহ, উত্তর দিনাজপুরে কংগ্রেসের নড়বড়ে ভিতের ছবিটা। গৌড়বঙ্গের তিন জেলার সাতটি পুরসভার বহু ওয়ার্ডেই প্রার্থী দিতে পারেনি কংগ্রেস। এই না পাড়ার পেছনে কংগ্রেস নেতাদের মুখে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ থাকলেও সংগঠনের দুর্বলতার কথাও মানছেন দলের অনেকেই।
উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের শ্রীকলোনিতে বাড়ি প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির। কালিয়াগঞ্জ পুরসভাতেও ভোট রয়েছে। পুরসভার ১৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ছটিতেই কংগ্রেস প্রার্থী দিতে পারেনি। এছাড়া ডালখোলা পুরসভার ১৬টির মধ্যে ৯টি এবং ইসলামপুরে ১৭টির মধ্যে ১৩টি ওয়ার্ডেই কংগ্রেস প্রার্থী নেই। দক্ষিণ দিনাজপুরে গঙ্গারামপুরে ১৮টি ওয়ার্ডেই কংগ্রেসের প্রার্থী নেই। বালুরঘাটে ২৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে মাত্র ৯টি ওয়ার্ডে প্রার্থী দিয়েছে কংগ্রেস। মালদহের ইংরেজবাজার ও পুরাতন মালদহ পুরসভাতেও একই ছবি। দুই পুরসভার ৪৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৭টি ওয়ার্ডে কংগ্রেসের প্রার্থী নেই।
দক্ষিণ দিনাজপুর ছাড়া মালদহ ও উত্তর দিনাজপুরে রাজ্যের পালাবদলের পরেও পুরসভা কংগ্রেসের দখলে ছিল। ২০১০ সালে ইংরেজবাজার, ২০১৫ সালে ইসলামপুর, কালিয়াগঞ্জ, ২০১৩সালে ডালখোলা পুরসভা ছিল কংগ্রেসের দখলে। পরবর্তী কালে হাত ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন কংগ্রেসের নেতা, নেত্রীরা। হাত থেকে পুরসভা হয়ে ওঠে ঘাসফুলের। মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই কেন এমন অবস্থা কংগ্রেসের?
উত্তর দিনাজপুরের কংগ্রেসের জেলা সভাপতি মোহিত সেনগুপ্ত বলেন, “প্রার্থী দেওয়ার মতো ক্ষমতা কংগ্রেসের এখনও আছে। তৃণমূলের সন্ত্রাসের ভয়ে অনেকে বিরোধী প্রতীকে দাঁড়াতে চায়ছেন না।” প্রিয় ঘনিষ্ঠ হিসেবে রাজনীতিতে পরিচিত রাজ্যের মন্ত্রী গোলাম রব্বানি বলেন, “বরকতদা, প্রিয়দা মানুষের জন্য কাজ করতেন। তাঁদের কাজকেই মানুষ ভোট দিতেন। সেই কাজ এখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করছেন। তাই কংগ্রেস এখন জেলায় অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে।” কোতুয়ালি পরিবারের কংগ্রেস সদস্য ইশা খান চৌধুরী বলেন, “আমাদের কিছু ভুলের জন্যই মানুষ আমাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। সেই ভুল আমরা শুধরে নিয়েছি। সমস্ত ওয়ার্ডে প্রার্থী দিতে না পারলেও পুরভোটে কংগ্রেসের ফল ভাল হবে।”
তথ্য সহায়তা: অভিজিৎ সাহা, গৌর আচার্য, শান্তশ্রী মজুমদার, বিকাশ সাহা