রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বৃদ্ধার দেহ। —নিজস্ব চিত্র।
এক পুলিশ আধিকারিকের বৃদ্ধা মায়ের রক্তাক্ত দেহ তাঁর শোওয়ার ঘর থেকে উদ্ধার হল। সোমবার রাতে উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জের এই ঘটনায় ওই পুলিশ আধিকারিকের ভাইপোকে আটক করেছে পুলিশ। যদিও এই খুনের পিছনে ঠিক কী কারণ রয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
পুলিশ সূত্রে খবর, বীরঘই গ্রাম পঞ্চায়েতের জয়নগর গ্রামের বাসিন্দা ওই বৃদ্ধার নাম বাতাসি বর্মন (৭০)। তাঁর ছোট ছেলে মোহিনী বর্মন শিলিগুড়ির বাগডোগরা থানায় সাব ইনস্পেক্টর পদে কর্মরত। রাত ৩টে নাগাদ এই ঘটনার খবর পেয়ে তিনি রায়গঞ্জ থানায় চলে আসেন। বৃদ্ধার দেহ উদ্ধারের পর সোমবার রাতেই মোহিনীর ভাইপো শঙ্কর বর্মনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশের কাছে মৃতার বাড়ির লোকজন জানিয়েছেন, সোমবার গভীর রাতে ওই বৃদ্ধার শোওয়ার ঘরে তাঁর দেহ রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। এর পর রায়গঞ্জ থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্তের জন্য দেহটি রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।
তদন্তকারীরা আরও জানিয়েছেন, বৃদ্ধার মাথার ডান দিকে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাঁকে ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান পুলিশের। এই ঘটনায় মৃতার নাতি বছর চব্বিশের শঙ্করকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। শঙ্কর তাঁর বাবার সঙ্গে বাড়ির পাশেই চায়ের দোকান করেন বলে জানিয়েছেন মৃতার আত্মীয়রা। রাতে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে ঠাকুরমার ঘর থেকে টাকা নিতে গেলে বাধা পেয়েই সে ঠাকুমাকে খুন করে থাকতে পারে বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান পুলিশের।
রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছেন। তবে প্রতিবেশীরা তো বটেই, এই খুনের পিছনে কী কারণ রয়েছে, তা নিয়ে ধোঁয়াশায় তদন্তকারীরা। স্থানীয়দের দাবি, এলাকার সকলের সঙ্গেই সুসম্পর্ক ছিল ওই বৃদ্ধার। এমনকি, নিজের বাড়িতেও তাঁর সঙ্গে কারও ঝগড়াঝাটি হয়নি জানিয়েছেন মৃতার প্রতিবেশী পেশায় শিক্ষক সদানন্দ রায়।
এই ঘটনার পর সোমবার রাত প্রায় ৩টে নাগাদ রায়গঞ্জ থানায় আসেন মৃতার ছেলে মোহিনী। তাঁর বক্তব্য, ‘‘মায়ের মৃত্যুসংবাদ পেয়েই রায়গঞ্জে চলে এসেছি। কী কারণে এই ঘটনা, তা জানা নেই।’’ তবে বাতাসি দেবীর খুনের ঘটনায় তাঁর ভাইপো শঙ্করের আটক হওয়া নিয়ে মন্তব্য করেননি মোহিনী।
এই ঘটনায় নিজের ভাইপোর নাম জড়ালেও পারিবারিক সম্মানরক্ষার জন্যই কি মুখে কুলুপ আঁটলেন পুলিশকর্মী মোহিনী? এই খুনের পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে কি না, তা এখনই স্পষ্ট নয়। তবে এই খুনকে ঘিরে উঠছে একাধিক প্রশ্ন!