প্রতীকী ছবি
উত্তরপ্রদেশে আটক মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের শ্রমিকেরা যাতে জামিন পান, সে জন্য পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে রাজ্য সরকার। তাঁদের বাড়ি ফেরাতে যথাসাধ্য চেষ্টা করার কথা জানিয়েছেন স্থানীয় বিধায়ক মোস্তাক আলম। পুলিশের হেফাজতে থাকা ৬ শ্রমিকদের জামিন করানোর চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন সেখানকার হোটেলের মালিকেরাও।
এমন সব খবরে নতুন বছরের শুরুতে কিছুটা হলেও আশ্বস্ত ডাঙ্গিলা ও জনমদোলে থাকা পরিজনেরা।
সংসারে অনটনের জেরে স্কুলের পড়া ছেড়ে লখনউ পাড়ি দিয়েছিলেন খাইরুল হক ও সালেদুল হক। তাঁদের পরিজনেরা জানান, লখনউয়ে হজরতগঞ্জের তুলসীবাজারে একটি হোটেলে কাজ করতেন তাঁরা। ১০ বছর ধরে ওই হোটেলে কাজ করা দুই ভাইকে ছেলের মতোই ভালবাসেন হোটেল মালিক। তিনি-ও তাঁদের ছাড়াতে সব রকম চেষ্টা করছেন।
খাইরুলের বাবা মহম্মদ হোদা বলেন, ‘‘ছেলে দু’টোকে হোটেল মালিক খুব ভালবাসেন বলে শুনেছিলাম। কিন্তু ওঁর সঙ্গে যোগাযোগ না হওয়ায় চিন্তায় ছিলাম। বুধবারই তিনি ফোন করে চিন্তা করতে বারণ করেছেন। যে ভাবেই হোক ছেলেদের জামিনের বন্দোবস্ত করবেন বলেও জানিয়েছেন।’’
ওই হোটেল মালিক উত্তম কাশ্যপ এ দিন লখনউ থেকে ফোনে আনন্দবাজারকে বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার আদালত খুললেই দুই ভাই যাতে জামিন পায় তার চেষ্টা করব। বাকিরা যে সব হোটেলে কাজ করত, সেগুলির মালিকেরাও চেষ্টা করছেন। আইনজীবীর সঙ্গেও কথা হয়েছে।’’ তিনি দাবি করেন, ‘‘ওরা কেউই গন্ডগোলে জড়িত ছিল না। ঝামেলার সময় হোটেলের দরজায় দাঁড়িয়েছিল। তার পরেও ওদের পুলিশ গ্রেফতার করে।’’
১৯ ডিসেম্বর উত্তরপ্রেদেশে হিংসায় জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার ছয় শ্রমিকের মধ্যে চার জন ডাঙ্গিলা ও দু’জন জনমদোল এলাকার বাসিন্দা। কী ভাবে তাঁরা ছাড়া পাবে সেই চিন্তায় দিশাহারা পরিজনেরা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকার জনপ্রতিনিধিরাও প্রত্যেকের বাড়িতে গিয়ে পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সকালে রাজ্য সরকারের বার্তা ওই সব পরিবারের কাছে পৌঁছে দেন ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সংস্থার ভাইস চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল নেতা তজমুল হোসেন। লখনউতে আব্দুল মাজিদ অনুকেশ ধৃতদের জামিনের বিষয়টি দেখছেন বলে সূত্রের খবর। পাশাপাশি জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা হরিশ্চন্দ্রপুরের বিধায়ক মোস্তাক আলমও ধৃতদের নথিপত্র লখনউয়ে দলীয় এক নেতাকে পাঠিয়ে বিষয়টি দেখার অনুরোধ করেছেন বলে জানান।
মোস্তাক বলেন, ‘‘অধীর চৌধুরী, সোমেন মিত্র, আব্দুল মান্নানকে বিষয়টি জানিয়েছি। পাশাপাশি এআইসিসি সম্পাদক তথা লখনউয়ের এক নেতা বি পি সিংহকেও সব নথি পাঠিয়ে কী করা যায় তা দেখতে বলেছি। রাজ্য সরকারও বিষয়টি দেখছে। সকলে ছাড়া পেয়ে বাড়ি ফিরে আসুক, এটাই চাই।’’
লখনউয়ে গ্রেফতার জনমদোলের আসলামের বাবা আব্দুল কালাম বলেন, ‘‘জনপ্রতিনিধিরা আশ্বাস দেওয়া কিছুটা হলেও ভরসা পেয়েছি। ওরা যাতে জামিন পেয়ে দ্রুত বাড়ি ফেরে সেই অপেক্ষায় দিন গুনছি।’’