লখনউয়ে ধৃত শ্রমিকদের উদ্বিগ্ন পরিবারের কাছে তজমুল। চাঁচল মহকুমার ডাঙ্গিলায়।
উত্তরপ্রদেশে ধৃত মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের ছয় শ্রমিকের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে ধৃতদের বিরুদ্ধে ইউএপিএ-তে কোনও ধারা দেওয়া হয়নি বলে সেখানকার আইনজীবীমহল সূত্রে খবর। উত্তরপ্রদেশে ধৃতদের আইনি সাহায্য দিতে এগিয়ে এসেছেন লখনউ বার অ্যাসোসিয়েশনের কয়েক জন আইনজীবী। তাঁদের কাছ থেকে জানা গেল, আগামী ২ জানুয়ারি আদালত খুলবে। ওই দিনই তাঁরা ধৃতদের জামিনের আর্জিতে আদালতে সওয়াল করবেন। মঙ্গলবার লখনউ থেকে আনন্দবাজারকে এমনটাই জানিয়েছেন আইনজীবী আব্দুল মজিদ অনুকেশ। তবে জামিন অযোগ্য ধারায় ওই মামলায় প্রথম দিন যে নিম্ন আদালতে জামিন হবে না, তা-ও তিনি জানিয়েছেন। ফলে তার বিরুদ্ধে তাঁরা ফের জেলা আদালতে আবেদন জানাবেন। সে ভাবেই তাঁরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আইনজীবী মজিদ এ দিন বলেন, ‘‘যে ধারায় মামলা করা হয়েছে, তাতে নিম্ন আদালতে ওদের জামিন হবে না বলে আমাদের ধারণা। তাই পরে লখনউ জেলা সিভিল কোর্টে যাব। দরকারে হাইকোর্টেও যেতে হতে পারে।’’
তিনি জানান, শুধু এই এলাকা থেকেই তিনশো জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তার মধ্যে হরিশ্চন্দ্রপুরের ছয় শ্রমিক রয়েছেন। তাঁরা সকলেই নিম্নবিত্ত পরিবারের সদস্য। তিনি বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ থেকে এসে ওঁরা এখানে গন্ডগোল পাকিয়েছেন বলে বলা হচ্ছে এবং ওঁদের বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা করা হয়েছে। তাই ওদের সাহায্য করতে চাইছি।’’
লখনউয়ের ওই আইনজীবীদের সূত্রেই জানা গিয়েছে, ধৃতদের বিরুদ্ধে ৩০৭ ধারায় খুনের চেষ্টার অভিযোগ এবং ৪৩৯ ধারায় অগ্নিসংযোগের অভিযোগে মামলা হয়েছে। দু’টি ধারাই জামিন অযোগ্য। পাশাপাশি ১৪৭, ১৪৮, ১৪৯ ধারায় (গন্ডগোল বাধানো, অস্ত্র নিয়ে গন্ডগোল, বেআইনি জমায়েত) মামলা করা হয়েছে। এর বাইরেও আরও বেশ কিছু ধারা ধৃতদের বিরুদ্ধে দেওয়া হয়েছে বলে সেখানকার আইনজীবীদের সূত্রে খবর।
১৯ ডিসেম্বর উত্তরপ্রদেশে হিংসার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার হওয়া ছয় শ্রমিক লখনউয়ের হজরতগঞ্জ তুলসী বাজারে একই হোটেলে কাজ করতেন। তাঁরা কী ভাবে ছাড়া পাবেন, সেই দুশ্চিন্তা এখনও তাড়া করছে পরিজনদের। তবে এ দিনই ধৃতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের পাশে থাকার বার্তা দেন তৃণমূল নেতা তজমুল হোসেন। আইনজীবী মাজিদের সাহায্যের বিষয়টি জেনেও কিছুটা স্বস্তিতে তাঁরা।
গন্ডগোলের পর সেখান থেকে পালিয়ে এসেছিলেন ডাঙ্গিলার ধৃত সাগর আলির দাদা আকবর আলি। তিনিও সেখানে একটি হোটেলে কাজ করতেন। এ দিন তিনি ফের একজনকে নিয়ে লখনউ রওনা দেন। আকবর বলেন, ‘‘ভাইকে ছাড়াতে হলে তো কিছু করতে হবে। এখান থেকে তো কিছুই বুঝতে পারছি না। তাই ঝুঁকি নিয়েই যাচ্ছি। সেখানে গিয়ে হোটেল মালিকের মাধ্যমে ওই উকিলবাবুর সঙ্গে দেখা করব, যাতে ওদের ছাড়িয়ে নিয়ে আসতে পারি।’’