প্রতীকী ছবি
এ বার খোদ জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্মী আক্রান্ত। রবিবার জেলা প্রশাসনের রিপোর্টে জানানো হয়েছে, নতুন করে জেলায় ৫৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তার মধ্যে সিএমওএইচ দফতরের ওই কর্মীও রয়েছেন। সব মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হল ১৯৯ জন।
এ দিন ওই রিপোর্ট বেরোতেই আতঙ্ক ছড়ায় জেলায়। গত কয়েকদিন ধরে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে কোচবিহারে। অভিযোগ, পরিস্থিতি মোকাবিলায় সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। সামাজিক দূরত্ব সেভাবে মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ। যদিও জেলা প্রশাসন ওই অভিযোগ ঠিক নয় বলে দাবি করেছে। জেলাশাসক পবন কাদিয়ান বলেন, “পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সঠিক পথেই কাজ এগোচ্ছে। আতঙ্কের কোনও ব্যাপার নেই। পরিস্থিতি অনুযায়ী দ্রুততার সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সিএমওএইচ অফিসের ওই কর্মী গত ২৩ মে ঝাড়খণ্ড থেকে ফিরেছেন। তিনি কোচবিহার শহরের দেবীবাড়ি এলাকায় একটি বাড়িতে ভাড়া থাকেন। সেই বাড়ি থেকে হাঁটাপথেই সিএমওএইচ দফতরের অফিস। অভিযোগ, ওই কর্মী ভিনরাজ্য থেকে ফিরেও অফিসে যাতায়াত করছিলেন। নানা কাজের দায়িত্ব ছিল তাঁর উপরে। তিনি কোচবিহার পলিটেকনিক কলেজের কোয়রান্টিন সেন্টারেও গিয়েছিলেন। সেই কোয়রান্টিন সেন্টারের অনেকেই করোনায়
আক্রান্ত হন।
স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, স্বাস্থ্য দফতরের একজন কর্মী কেন হোম কোয়রান্টিনে থাকলেন না। অফিসেই যখন গেলেন, তখন কেন আধিকারিকেরা তাঁকে হোম কোয়রান্টিনে যেতে বলেননি। দিনকয়েক আগেই সিএমওএইচ বদল নিয়ে আন্দোলন করেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। তাঁরা জেলাশাসকের দফতরের সামনে গিয়ে বিক্ষোভও দেখান। সেখানে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষও গিয়েছিলেন। তিনি স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে কথাও বলেন। সেখানে ওই কর্মী গিয়েছিলেন কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
প্রশাসনের তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে, ওই কর্মী স্বাস্থ্যবিধি মেনেই কাজকর্ম করেছেন। তিনি অফিসের বাইরে কোথাও যাননি। তাঁর সংস্পর্শে যাঁরা এসেছিলেন, ইতিমধ্যেই তাঁদের লালারসের পরীক্ষা হয়েছে। ওই তালিকায় জেলার সিএমওএইচ দফতরের একাধিক আধিকারিকও রয়েছেন। তাঁদের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। ওই কর্মীকে ইতিমধ্যেই শিলিগুড়িতে কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তাঁর কাছ থেকে করোনা ছড়িয়ে পড়ার সুযোগ ছিল না। ওই কর্মীর ভাড়াবাড়ি এবং লাগোয়া অংশকে কন্টেনমেন্ট জোন ঘোষণা করা হয়েছে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “ইতিমধ্যেই ৫৯ জন পুরোপুরি সুস্থ হয়েছেন। তাঁদের কারও কোনও উপসর্গ ছিল না। ওই কর্মীরও কোনও ঊপসর্গ নেই। তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন বলে আশা করছি।”