দেহ এসেছে। ভিড় করেছে গোটা এলাকা। নিজস্ব চিত্র
কার্শিয়াং থেকে শিলিগুড়ি ফেরার পথে রোহিনী রোডের কারগিলদারায় খাদে গাড়ি পড়ে মৃত্যু হল শিলিগুড়ির পাঁচ জনের। শনিবার রাতের ঘটনা।
রবিবার গ্রামবাসীরা দেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দিলে উদ্ধারে নামে পুলিশ ও দমকল। রবিবার রাত পর্যন্ত দু’টি দেহ উদ্ধার হয়। সোমবার সকাল থেকে তল্লাশি চালিয়ে আরও দু’টি দেহ উদ্ধার হয়। সোমবার বিকেলে খাদের প্রায় ৪০০ মিটার নীচে আর একটি দেহ চিহ্নিত করে পুলিশ, চিহ্নিত করা হয় গাড়িটিও। এ দিন চারজনের দেহ ময়নাতদন্তের পর শিলিগুড়ির দিকে রওনা করানো হয়েছে। দার্জিলিং জেলা পুলিশ সুপার অমরনাথ কে বলেন, ‘‘দেহগুলি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। দুর্ঘটনার কারণ দেখা হচ্ছে।’’
পুলিশ এবং পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতরা হলেন শিলিগুড়ি পুরসভার ২২ নম্বর ওয়ার্ডের রথখোলা সুভাষনগরের বাসিন্দা ঋষভ দাস (১৭), সুব্রত দাস (২০), এবং বিক্রম দাস (২১), অভ্রনীল কুণ্ডু (২২) এবং মিলনপল্লির বাসিন্দা রাজ সিংহ (১৯)। পুলিশ সূত্রে খবর, স্বাধীনতা দিবসের দিন ঋষভ, সুব্রত, বিক্রম, রাজ এই চারজন ঋষভের গাড়িতে লাটাগুড়ি গিয়েছিলেন। সেখানে পিকনিক করে রাত ন’টা নাগাদ তাঁরা পাড়ায় ফিরে আসেন। সেখান থেকে ওই পাড়ারই আর এক বাসিন্দা অভ্রনীলকে গাড়িতে তুলে কার্শিয়াংয়ের দিকে রওনা হন সকলে। ঋষভ গাড়ি চালাচ্ছিল বলে পুলিশের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে।
বিক্রমের জ্যেঠু রতন দাস বলেন, ‘‘ভাইপোকে আমার ভাই উত্তম রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ ফোন করে জিজ্ঞাসা করে কখন বাড়ি আসবি? ওপাশ থেকে উত্তর আসে, কার্শিয়াং থেকে ফিরছি।’’ তার পরে রাতে তারা না ফিরলে আর যোগাযোগ করতে পারেনি কারও পরিবার। সকলের ফোন সুইচড অফ হয়ে যায়। রবিবার সকালে যুবকদের পরিবার শিলিগুড়ি থানায় যোগাযোগ করে। ওদিকে, রবিবার সকালেই কারগিলদারায় গ্রামবাসীরা পাহাড়ি রাস্তার পাশে খাদের কিছুটা নিচে দেহ পড়ে থাকতে দেখলে খোঁজ শুরু হয়। রবিবার রাতে নিখোঁজ ডায়েরি হওয়ার পর তা সব থানায় পাঠানোর পর পুলিশের কাছে পরিষ্কার হয়, দুর্ঘটনায় মৃত যুবকরা শিলিগুড়ির।
পুলিশ জানায়, এলাকায় বৃষ্টি পড়ছিল। ‘আই লভ কার্শিয়াং’ কংক্রিটের ফলকের কাছে একটি বাঁকের মুখে গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রায় ৪০০ মিটার নিচে পড়ে যায়, ছিটকে পড়েন আরোহীরা। এ দিন ঘটনার খবর পেয়েই কয়েকটি গাড়িতে রথখোলা থেকে রওনা হয় মৃতদের পরিবার এবং পড়শিরা। ঘটনাস্থলে যান ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটর রিঙ্কি দাস। তিনি বলেন, ‘‘খুবই মর্মান্তিক ঘটনা। পরিবারের পাশে রয়েছি।’’