মেডিক্যালে: শোকগ্রস্ত পরিবারকে সান্ত্বনা। নিজস্ব চিত্র
কুয়াশাঢাকা জাতীয় সড়কে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর বলি হলেন এক রাতেই পাঁচ জন। রবিবার তিনটি আলাদা পথ দুর্ঘটনায় বিধাননগর থেকে ঘোষপুকুরের মধ্যে ১৩ কিলোমিটার পথে ঘটে যায় এই মৃত্যুমিছিল। কুয়াশায় দৃশ্যমানতা কমেছে। এই অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে, রাস্তায় বেআইনি পার্কিং, বেপরোয়া গতি নিয়ন্ত্রণে রাতে নজরদারি রয়েছে তো? পুলিশ সূত্রে অবশ্য দাবি, সরকারি বাসের চালক মোবাইল ফোনে কথা বলছিলেন বলেই দুঘর্টনা ঘটে। দুই চালক গ্রেফতার হয়েছেন বলে জানায় পুলিশ।
পুলিশ জানায়, ভোর তিনটে নাগাদ কলকাতা-কোচবিহার রুটের একটি সরকারি বাস রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে পড়া একটি ট্রেলারের পিছনে ধাক্কা মারে। ফাঁসিদেওয়া থানার সহোদরগছে ঘটনায় আসন থেকে ছিটকে পড়েন কয়েক জন যাত্রী। ঘটনাস্থলেই বাসের কন্ডাক্টর, দিনহাটার বাসিন্দা মৃদুল দাস (৪৮) এবং যাত্রী মালদহের বাসিন্দা সন্তোষ মণ্ডলের (৩৮) মৃত্যু হয়। অন্য এক যাত্রী, ধুলিয়ানের বাসিন্দা ইব্রাহিম শেখ (৩৫) উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে মারা যান। শিলিগুড়ির বিদ্যাচক্র কলোনির বাসিন্দা গীতাংশু ঘোষ জখম অবস্থায় মেডিক্যালে ভর্তি। জখম আরও ৭ জন চিকিৎসার পর ছাড়া পান।
এ দিন মৃতের পরিবারদের ২ লক্ষ টাকা করে এবং জখম গীতাংশুবাবুর পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেয় উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম। চেক তুলে দেন পযর্টনমন্ত্রী গৌতম দেব। তিনি বলেন, ‘‘ঘটনা দুঃখজনক। তদন্ত করতে বলা হয়েছে নিগমকে। পরিবারের পাশে রয়েছি।’’ বাসের চালক দুর্ঘটনার ঠিক আগে মোবাইলে কথা বলছিলেন বলে আহত যাত্রীদের অনেকেই জানিয়েছেন। তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানান নিগমের শিলিগুড়ির ডিভিশনাল ম্যানেজার দীপঙ্কর দত্ত। দার্জিলিঙের এসপি সন্তোষ নিম্বলকর বলেন, ‘‘বাসের চালক মোবাইলে কথা বলতে গিয়েই বিপদ ডেকে এনেছেন।’’ স্থানীয়দের দাবি, রাতে বিধাননগর থেকে ঘোষপুকুরের মধ্যে অনেক জায়গায় ট্রাক পার্কিং করা থাকে। পুলিশকর্তারা জানান, নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। কড়া চেকিং চলে রাতভোর।
রাতেই আরও এক দুঘর্টনায় প্রাণ হারান বিধাননগর-২ নম্বর পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান সুজয় মজুমদার (৩৮)। ভীমবারে রাস্তা পার হওয়ার সময় প্রচণ্ড গতিতে একটি ছোট গাড়ি তাঁকে ধাক্কা মেরে পালিয়ে যাওয়ার সময় টোল গেটে ধরা পড়ে যায়। মহকুমা পরিষদের সদ্য প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা কাজল ঘোষ বলেন, ‘‘দলের অপূরণীয় ক্ষতি। চালক মদ্যপ ছিলেন বলে শুনেছি।’’ ওই রাতেই ৯টা নাগাদ ঘোষপুকুরে বাইকের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গয়াগঙ্গা চা বাগানের কাছে অভিষেক তিরকি (২২) নামে এক যুবক মারা যান।