জাপানি এনসেফ্যালাইটিস এবং অ্যাকিউট এনসেফ্যালাইটিস সিনড্রমে আক্রান্ত হয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেই মৃত্যুর সংখ্যা এ বছর চল্লিশ ছাড়াল। গত কয়েক বছরের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা কমলেও এখনও যে মৃত্যু রোধ করা যায়নি তা স্পষ্ট। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল বাদেও জেলাগুলিতে মৃত্যুর পরিসংখ্যান যা মিলেছে তাতে উত্তরবঙ্গে জেই, এইএসে মৃত্যু সংখ্যা এবছর অন্তত ৫৫ জন। তাও গত অক্টোবরের মাসের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত। তার পরেও উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে আরও কয়েকজনের মৃত্যু ঘটেছে বলে চিকিৎসকদের একাংশ জানিয়েছেন। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের সুপার মৈত্রেয়ী কর বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে যা কিছু স্বাস্থ্য দফতরই বলবে। তাদের সমস্ত তথ্যই নিয়মিত জানানো হয়।’’
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রেই জানা গিয়েছে, গত বছর জেই এবং এইএসে ৭০ জনের মতো মারা গিয়েছেন। তার মধ্যে জেইতে মারা গিয়েছিলেন অন্তত ১৯ জন। এ বছর ২০ অক্টোবর পর্যন্ত পাওয়া হিসাব অনুসারে জেই’তে মৃত্যুর সংখ্যা ১৫ জনের মতো। ২০১৪ এবং ২০১৫ সালে জেই’তে উত্তরবঙ্গে মারা গিয়েছিলেন ৪৬ এবং ৪০ জন। জেই এবং এইএস মিলিয়ে ওই দুই বছর মারা গিয়েছেন ১৬৫ এবং ১০৫ জন। ২০১৫ সাল থেকে দুই বছর বয়স্কদের জেই টিকাকরণের পরে মৃত্যুর সংখ্যায় রাশ টানা গেলেও ওই টিকাকরণ অনেক জায়গাতেই ফের করা দরকার বলে চিকিৎসকদের একাংশ মনে করছেন। তা ছাড়া মৃতদের মধ্যে জেই নয় তথা এইএসে আক্রান্ত এমন সংখ্যাই বেশি।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল সূত্রেই জানা গিয়েছে, এ বছর এখানে চিকিৎসা করাতে এসে জেই এইএস-এ জলপাইগুড়ির অন্তত ১১ জন মারা গিয়েছেন। শিলিগুড়ি লাগোয়া ভক্তিনগর এলাকার ২ জন এবং কাওয়াখালি এলাকার এক বাসিন্দাও রয়েছেন।
শিলিগুড়ি শহরে প্রধাননগর এবং বাগরাকোট এলাকার দুই জনের মৃত্যু হয়েছে এইএসে। এইএসের সংক্রমণ ছড়ায় কিউলেক্স বিশনই মশা। শুয়োর, পরিযায়ী পাখির দেহ থেকে জেই, এইএসের জীবাণু মশার মাধ্যমে মানুষের শরীরে যায়। শহরে প্রধাননগর লাগোয়া মহানন্দার চর বা বাগরাকোট এলাকায় শুয়োর এখনও ঘুরে বেড়ায়। পুরসভার তরফে এখনও শহরে শুয়োর পালন বন্ধ করা সম্ভব হয়নি বলে অভিযোগ। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে অনেক রোগীর ‘অজানা জ্বর’-এর ক্ষেত্রে রক্তপরীক্ষা দরকার।