প্রতীকী ছবি
ফের করোনার থাবা জলপাইগুড়িতে। শনিবার জেলায় যত পরিমাণ আক্রান্ত হয়েছিলেন। রবিবার সেই সংখ্যাটা দ্বিগুণ হয়ে গেল। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, এ দিন জেলায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৮ জন। এই নিয়ে জেলায় রবিবার রাত পর্যন্ত করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৮৭।
আক্রান্তদের মধ্যে ময়নাগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালের এক চিকিৎসক রয়েছেন। এছাড়াও কয়েকজন স্বাস্থ্য কর্মী, পুলিশ ও বন দফতরের কর্মীরাও আছেন বলে করোনা মোকাবিলায় উত্তরবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক চিকিৎসক সুশান্ত রায় জানান। আক্রান্তদের জলপাইগুড়ি কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করা হবে বলে জানান তিনি। আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা সকলকেই কোয়রান্টিনে রাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানান সুশান্ত রায়। জলপাইগুড়ি শহরের বাসিন্দা এক পুলিশ অফিসারের শরীরে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। ময়নাগুড়ি থানায় কর্মরত ওই অফিসার নিবেদিতা সরণীর এক বাড়িতে ভাড়া থাকেন। বাসিন্দাদের দাবি, সম্প্রতি তিনি বাড়ি থেকে ঘুরে গিয়েছেন। এরপরেই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। নিয়ম অনুযায়ী এলাকা কনটেননেন্ট জ়োন হতে চলেছে। ওই বুথটিকে বাফার জ়োন ঘোষণা করা হবে। জলপাইগুড়ি পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের সদস্য সন্দীপ মাহাতো বলেন, ‘‘সোমবার পুরসভায় বৈঠক আছে। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে।’’
এ দিনের আক্রান্তদের মধ্যে ময়নাগুড়ি ব্লকের ১৭ জন রয়েছেন। এঁদের মধ্যে একজন চিকিৎসক ও তিনজন স্বাস্থ্যকর্মী আছেন বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর। আক্রান্তদের মধ্যে জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের ৮ জন আছেন। মালবাজার ব্লকের ৮ জন, মেটেলি ব্লকের ২ জন, নাগরাকাটা ব্লকের ১ জন, ধূপগুড়ি ব্লকের ১ জন এবং রাজগঞ্জ ব্লকের ১ জন রয়েছেন বলে স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে।
স্বাস্থ্যকর্মীদের পাশাপাশি এ দিন ময়নাগুড়ি থানার পুলিশকর্মী আক্রান্তের খবর ছড়িয়ে পড়তেই জেলার পুলিশ মহলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। জেলা পুলিশ সুপার ও পদস্থ পুলিশ আধিকারিকেরা ময়নাগুড়ি থানায় গিয়ে কর্মীদের মনোবল বাড়াতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করেছেন। ওই আক্রান্তের সংস্পর্শে আসা অন্যদের কোয়রান্টিনে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলে জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। ময়নাগুড়ি থানায় এ দিন স্যানিটাইজ়েশন করা হয়েছে।
জেলায় আক্রান্তদের নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে নানা ধরনের গুজব ও কুৎসা রটনা চলছে বলে অভিযোগ। অবিলম্বে এই কাজ বন্ধ করা না হলে স্বাস্থ্য দফতর ও জেলা প্রশাসনের তরফে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জেলা প্রশাসনের এক পদস্থ আধিকারিক এ দিন জানান।
এ দিকে, জলপাইগুড়ি কোভিড হাসপাতালে প্রয়োজনীয় পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। করোনা আক্রান্তদের বিছানার চাদর, মশারি, সাবান ও অন্য প্রয়োজনীয় কিট দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ। রাতে খাবারের সময় পার হওয়ার পরে আক্রান্তদের আনা হলে তাঁদের জন্য শুকনো খাবারের ব্যবস্থাও থাকছে না বলে অভিযোগ। উপযুক্ত ব্যবস্থার আশ্বাস দিয়েছেন করোনা মোকাবিলায় উত্তরবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক চিকিৎসক সুশান্ত রায় ।