তিন মূর্তিকে নিয়ে তালি, নিজস্বীর ধু1

পুলিশ মহলে ওদের নাম ‘চারমূর্তি’। এক জন এখন বীরভূমে, ভিআইপি ডিউটিতে। তাই বৃহস্পতিবার মঞ্চে দেখা গেল তিন জনকে। তিস্তা, অ্যাবি আর বাটলি। যাদের দেখে অনুষ্ঠানে হাজির লোকজন নিজেদের মধ্যে বলাবলি করছিলেন, এদের আবার ঘুষ-টুস দেওয়ার চেষ্টা কোরো না বাবা! ঘ্যাঁক করে কামড় বসিয়ে দিতে কতক্ষণ!

Advertisement

কৌশিক চৌধুরী

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০১৬ ০১:১৯
Share:

অনুষ্ঠানে তিন কুকুর তিস্তা, অ্যাবি আর বাটলি। —নিজস্ব চিত্র।

পুলিশ মহলে ওদের নাম ‘চারমূর্তি’। এক জন এখন বীরভূমে, ভিআইপি ডিউটিতে। তাই বৃহস্পতিবার মঞ্চে দেখা গেল তিন জনকে। তিস্তা, অ্যাবি আর বাটলি। যাদের দেখে অনুষ্ঠানে হাজির লোকজন নিজেদের মধ্যে বলাবলি করছিলেন, এদের আবার ঘুষ-টুস দেওয়ার চেষ্টা কোরো না বাবা! ঘ্যাঁক করে কামড় বসিয়ে দিতে কতক্ষণ!

Advertisement

মঞ্চের দিকে তাকিয়ে অবশ্য তাদের খুব দস্যি মনে হল না। বরং ল্যাজ-ট্যাজ নেড়ে বেশ আহ্লাদই করছিল তিন জনে। এমনকী, বীরভূমে আর এক সঙ্গী গঙ্গা চলে গিয়েছে বলে বিশেষ দুঃখও দেখা গেল না।

বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের বর্ষ পূর্তির অনুষ্ঠানে ওই সকলের নজর কেড়ে নিল তিন পুলিশ-কুকুরই। খোদ পুলিশ কমিশনার থেকে পুলিশ কর্মী, হাজির সাধারণ মানুষ— সকলেই উঠে দাঁড়িয়ে হাততালির মাঝে ওরা এসে বসে মঞ্চে। সঙ্গে থাকা মাস্টারেরা ওদের হয়ে ফুলের তোড়া নিলেন। মাইকে ঘোষণা হল, ওদের নাম আর কাজের খতিয়ান। শেষে পুলিশ ব্যান্ডের তালে তালে ওরা ফিরল গাড়িতে।

Advertisement

কমিশনারেটের চার বছর পূর্তি উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বাসিন্দাদের সঙ্গে পুলিশের মতামত আদানপ্রদানের অনুষ্ঠান করা হয়। সেখানে শহরের নানা সমস্যা নিয়ে গুরুগম্ভীর আলোচনার মধ্যে ওই তিন জন যেন হাল্কা হাওয়া। কমিশনারেটের ওই পুলিশ কুকুরগুলি দখল করে নিল বাসিন্দাদের মন। চার কুকুরের মধ্যে তিনটি জার্মান শেপার্ড, একটি ল্যাবরেডর প্রজাতির। এ দিন অবশ্য ল্যাবরেডরটি হাজির ছিল না। প্রত্যেকেরই বয়স সাড়ে তিন বছরের মধ্যে। ব্যারাকপুরে প্রশিক্ষণের পর এখন শিলিগুড়িতে ‘পোস্টিং’। তিস্তা ও ব্যাটলি ট্রাকার, গঙ্গা বিস্ফোরক আর অ্যাবি মাদক বিশেষজ্ঞ। ইতিমধ্যে গত বছর সেপ্টেম্বরে মাটিগাড়ার একটি খুনের ঘটনার দুষ্কৃতীদের পালানোর রাস্তা খুঁজে দিয়েছিল তিস্তা। রাষ্ট্রপতি থেকে প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা তো বটেই, নানা উৎসব, অনুষ্ঠানের ডাকে ব্যস্ততায় দিন কাটে ওদের। সুনাম থাকায় গঙ্গার ডাক পড়েছে বীরভূমে।

পুলিশ কমিশনার চেলিং সিমিক লেপচা তো বলেই ফেললেন, ‘‘ওরা প্রচণ্ড পরিশ্রমী। কাজ নিয়ে মুখ টু শব্দ করে না। সব সময় চুপচাপ পিছনেই থাকে। তাই এ দিন ওদের সবার সামনে এনে সংবর্ধনা দেওয়া হল।’’

বিশেষ অতিথি হিসাবে তাই অ্যাবি’রা ‘অন্য দিনের’ থেকে বেশি কদর পেলেন। নতুন বেল্ট পরানো হল। কমিশনারের নির্দেশে এনে বসানো হল বড় ফ্যানের তলায়। জলের ব্যবস্থা হল। দুপুরে স্কোয়াডে ফিরে মাংস ভাতের মেনুও থাকল। অনুষ্ঠানে ওদের দেখে মোবাইলে ফোটো, সেলফি তুলতেও হুড়োহুড়ি পড়ে গেল। তিস্তারা অবশ্য চুপ। মাস্টারদের নির্দেশে মঞ্চে সামনে বসে থাকল। তা দেখে, বাসিন্দাদের অনেকেই বললেন, ‘‘লেজ নেড়ে হয়তো বলতে চাইছে, দেখ, আমরাও পুলিশ পরিবারের সদস্য।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement