দুর্ঘটনার পরে। জলপাইগুড়ি-ময়নাগুড়ি জাতীয় সড়কের উল্লারডাবরি এলাকায়। নিজস্ব চিত্র
ময়নাগুড়ির উল্লারডাবড়িতে ট্রাক ও ট্রাক্টরের মুখোমুখি সংঘর্ষে তিন শ্রমিকের মৃত্যু হল। জখম ১২ জন। জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে আহতদের চিকিৎসা চলছে। তাঁদের মধ্যে তিন জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে পাঠানো হয়। অন্য দিকে, চিকিৎসাধীনদের হাসপাতালে দেখতে গিয়ে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ ট্রাক্টরে শ্রমিকদের নিয়ে যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। ট্রাক্টরে যাত্রী পরিবহণ সম্পূর্ণ বেআইনি বলে জানিয়েছে পুলিশও।
পুলিশ সূত্রে খবর, মঙ্গলবার সকালে জলপাইগুড়ি-ময়নাগুড়ি জাতীয় সড়কের উল্লারডাবড়ি এলাকায় ট্রাক্টর ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। স্থানীয় সূত্রে খবর, ময়নাগুড়ি রোড থেকে দোমোহনি এলাকায় রেলের কাজের জন্য ট্রাক্টরে ২৩ জন শ্রমিককে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। দুর্ঘটনার কিছু আগে ৮ জন শ্রমিক নেমে যান। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উল্টোদিক থেকে আসা একটি ট্রাক ধাক্কা মারে ট্রাক্টরে। প্রায় ১০০ মিটার দূরে ছিটকে যায় ট্রাক্টর। ট্রাক্টরে থাকা ১৫ জন শ্রমিকও পড়ে যান। দুমড়ে যায় ট্রাক্টরটি। স্থানীয়রা প্রথমে আহতদের উদ্ধার করতে এগিয়ে আসেন। খবর পেয়ে ময়নাগুড়ি থানার হাইওয়ে ট্র্যাফিক পুলিশ ও থানার পুলিশ যায়। আহতদের উদ্ধার করে জলপাইগুড়ি সরকারি মেডিকেল কলেজ ও জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে ৩ জনকে মৃত বলে জানানো হয়েছে। পুলিশ জানায়, মুর্শিদাবাদ ও বীরভূম জেলায় ২৮-৩০ জন রেলের ঠিকা কর্মী ময়নাগুড়ি রোডের একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। তাঁরা নিউ মালবাজার ও চ্যাংরাবান্ধা রুটে রেললাইনে বৈদ্যুতিক সংযোগের কাজ করছেন। দোমোহনি লাইনে কাজে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানায়, মৃতদের দু’জন বীরভূমের মুরারই থানা এলাকার বাসিন্দা। অন্য জন মুর্শিদাবাদ জেলার লালগোলার বাসিন্দা। মুরারইয়ের মৃত শ্রমিকদের নাম সুমন শেখ (২৫)। বাড়ি ঘুসকিরায়। অন্য জনের নাম কমল মাল (২৭)। বাড়ি রাজগ্রামে। লালগোলার শ্রমিকের নাম হাসান শেখ।
ওই ট্রাক্টরে থাকা শ্রমিক হাসিবুল শেখ বলেন ‘‘রেলের কাজে যাচ্ছিলাম। ট্রাক্টরে বালি-পাথরও ছিল। ময়নাগুড়ি রোড থেকে দোমোহনির দিকে আসার পথে দুর্ঘটনা ঘটে। আমরা ৮ জন দুর্ঘটনার আগেই আমাদের কর্মস্থলে নেমে যাই।’’
বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘কেন ট্রাক্টরে শ্রমিকদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল দেখা জরুরি। নিহত ও আহতদের ক্ষতিপূরণের বিষয়টি দেখা জরুরি।’’ ময়নাগুড়ি থানার আইসি তমাল দাস বলেন, ‘‘পুলিশ তদন্ত করছে। ট্রাকের চালক ও খালাসি পলাতক।’’ জলপাইগুড়ি মেডিক্যালের সুপার কল্যাণ খান বলেন, ‘‘আশঙ্কাজনক অবস্থায় তিন জনকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে রেফার করা হয়েছে।’’