মাস খানেক আগে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে এক স্কুল ছাত্রীকে ফুঁসলে নিয়ে যায় গ্রামেরই এক যুবক। তারপরে ওই ছাত্রীটিকে চার বন্ধু মিলে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের হবিবপুর থানার ভাবুক গ্রামে। মঙ্গলবার নির্যাতিতা ছাত্রীর পরিবার হবিবপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে, তিন জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের সকলেরই বাড়ি হবিবপুর থানার জাজইল গ্রাম পঞ্চায়েতের ভাবুক গ্রামে। প্রত্যেকেই দিনমজুরি করে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। মালদহের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। ঘটনার সমস্ত দিকই আমরা খতিয়ে দেখছি।’’
হবিবপুর থানার জাজইল গ্রাম পঞ্চায়েতের ভাবুক গ্রামের এক দিন মজুর পরিবারের মেয়ে মাস খানেক আগে নিখোঁজ হয়ে যায়। মেয়েটি হবিবপুরের একটি হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। তাঁরা তিন ভাই বোন। তাদের মধ্যে মেয়েটিই ছোট। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, হঠাৎ করে মেয়ে নিখোঁজ হয়ে যাওয়ায় হবিবপুর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। এ ছাড়া তাঁরা মেয়ের খোঁজ খবর শুরু করে। তবে মেয়ের কোনও সন্ধান পাননি তাঁরা। এদিন সকালবেলা ছাত্রীটি হাজির হয় বাড়িতে। পরিবারের লোকেদের সমস্ত ঘটনাটি জানায়।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই গ্রামেরই এক যুবক ছাত্রীটির সঙ্গে আলাপ জমায়। তার পরে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে মেয়েটিকে সে কোচবিহারে তার এক বন্ধুর বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে ওই যুবক ছাড়াও তার চার বন্ধু মিলে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। অভিযোগ, তাকে ঘর থেকে বের হতেও দেওয়া হত না। এদিন ভোরে ওই যুবকেরা একটি ঘরে ঘুমিয়ে ছিল। সেই সুযোগেই মেয়েটি বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। তারপরে বাস ধরে মালদহ ফিরে আসে। মালদহ থেকে বাস ধরে আবার হবিবপুরে বাড়ি ফিরে যায়। পরিবারের লোকেদের সমস্ত ঘটনা জানালে এদিনই হবিবপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয় ওই যুবক সহ তার চার বন্ধুর নামে।
এ দিনই বিকেলে তিন যুবককে পুলিশ ওই এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এক যুবক বিবাহিত। তাঁর এক ছেলে মেয়েও রয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, ওই তিন যুবক ছাত্রীটির খোঁজে এলাকায় আসতে পারে। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। নির্যাতিতা ছাত্রীর দাদা ঘটনায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা মেয়েকে খুঁজে না পেয়ে থানাতে অভিযোগ করি। তার পরেও পুলিশ বোনের কোনও সন্ধান করতে পারেনি। এদিন সকালে বোন বাড়ি ফিরে আসে। তখনই আমাদের সমস্ত ঘটনা জানায় বোন। আমরা থানাতে গিয়ে অভিযোগ করি। আমরা চাই পুলিশ প্রত্যেককে কঠোর শাস্তি দিক।’’ তিনি জানান, তাঁর বোন ঘটনার পর মানসিক ভাবেও ভেঙে পড়েছে। হবিবপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত ওই তিন যুবককে আজ বুধবার মালদহ জেলা আদালতে পাঠানো হবে। আর নির্যাতিতা মেয়েটির ডাক্তারিও পরীক্ষাও করা হবে। ঘটনার সমস্ত দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।