প্রতীকী ছবি
তৃণমূল বিধায়ক এলাকা ছেড়েছিলেন। অন্য নেতারাও গা ঢাকা দিয়েছিলেন। লোকসভা ভোটের পরে সেই দুর্যোগের সময়ে দুই তৃণমূল নেতা কিন্তু মাটি কামড়ে পড়েছিলেন। দলীয় সূত্রের খবর, ব্লক সভাপতির দৌড়ে সিতাইয়ের ওই দুই স্বচ্ছ ভাবমূর্তির নেতাকেই সামনে রেখেছে টিম পিকে। কোচবিহারের এমনই প্রায় ৪০ জন নেতার নাম ব্লক সভাপতির জন্য নথিবদ্ধ করেছে টিম পিকে। বিধায়কদের কাছ থেকেও নেওয়া হয়েছে ব্লক সভাপতির জন্য নামের তালিকা। দলীয় সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, দুই তালিকার কোথাও ঠাঁই হয়নি সদ্য প্রাক্তন ব্লক সভাপতিদের বেশির ভাগেরই। কেন? দলের অন্দরে নেতৃত্বের দাবি, সদ্য প্রাক্তন ব্লক সভাপতিদের একটি অংশের ভাবমূর্তি স্বচ্ছ নয়। তাঁদের না সরালে কোচবিহারে ‘কামব্যাক’ করা অসম্ভব।
দলের জেলা নেতারা ‘টিম পিকে’ নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ। ব্লক সভাপতি নির্বাচন নিয়ে দলের কোচবিহার জেলার সভাপতি তথা অনগ্রসর কল্যাণ দফতরের মন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ বলেন, “বিধানসভা ভিত্তিক দলের কমিটি রয়েছে। এ বারে বিধানসভা ভিত্তিক ব্লক সভাপতি হবে। বিধায়করা নামের তালিকা দেবেন। তা রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পাঠানো হবে। কাকে দায়িত্ব দেওয়া হবে, সেখানেই ঠিক হবে।” দলের অন্দরের খবর, বিধায়করা যে নামের তালিকা করেছেন, তাতে বিধানসভা কমিটিতে থাকা নেতাদের মধ্য থেকে বেছে নেওয়া হয়েছে। দলের জেলা কার্যকরী সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “ব্লক সভাপতি খুব শীঘ্রই ঘোষণা হবে। স্বচ্ছ নেতা-কর্মীরাই দায়িত্ব পাবেন, এটুকু বলতে পারে। অস্বচ্ছতার কোনও জায়গা তৃণমূলে নেই।”
১২টি ব্লক নিয়ে কোচবিহার জেলা। লোকসভা ভোটের আগে ওই বারোটি ব্লকে বারো জন ব্লক সভাপতি ছিলেন। এ ছাড়া ৬টি টাউন ব্লক ধরে নিয়ে আলাদা সভাপতি ছিল। লোকসভায় হেরে যাওয়ার পরে তৃণমূল জেলা সভাপতি বদল করে। সেই সময়ই ব্লক কমিটিও ভেঙে দেওয়া হয়। দিনহাটা, শীতলখুচি থেকে শুরু করে কোচবিহার এবং তুফানগঞ্জে একাধিক ব্লক সভাপতি’র বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠে আসতে থাকে। কয়েক জনের বিরুদ্ধে অস্বচ্ছতার অভিযোগ জমা হয় দলের কাছে। দলে গোষ্ঠীবিরোধও অব্যাহত ছিল। সে জন্য দল বিধানসভা ভিত্তিক কমিটি গঠন করে। কিন্তু তাতে দলের কর্মসূচি রূপায়ণে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। সমস্ত কিছুতেই একমাত্র বিধায়কের উপরেই ভরসা রাখতে হচ্ছে। এই অবস্থা দূর করতেই ফের নতুন করে ব্লক সভাপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। সেখানে গোষ্ঠী বিরোধের কথা মাথায় রেখে বিধানসভা ভিত্তিক ব্লক সভাপতি নির্বাচনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাতে ২২ জন ব্লক সভাপতি হবে।
ওই ব্লক সভাপতি ঘিরেই নতুন করে বিতর্ক দানা বাঁধে। আসরে নামে টিম পিকে। দল সূত্রে খবর, এই টিম প্রত্যেকটি ব্লক ধরে এক থেকে দু’জনের নাম সংগ্রহ করে। সেই তালিকা চলে গিয়েছে দলের রাজ্য নেতৃত্বের কাছে। বিধায়কদেরও তাই হিসেব কষেই এগোতে হচ্ছে। সিতাইয়ের বিধায়ক জগদীশ বসুনিয়া বলেন, “কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই। দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ হবে।”