প্রতীকী ছবি
মুম্বই থেকে কাটিহারগামী ‘শ্রমিক স্পেশ্যাল’ ট্রেনে মালদহ রেল স্টেশনে নামার কথা ছিল জেলার অন্তত তিনশো পরিযায়ী শ্রমিকের। বিকেল তিনটের আগেই স্টেশনে হাজির হন এক অতিরিক্ত জেলাশাসক-সহ প্রশাসনের একদল আধিকারিক। প্রচণ্ড গরমেও পিপিই পরে লালারস সংগ্রহে তৈরি ছিলেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরাও। বিকেল সওয়া তিনটে নাগাদ সেই ট্রেন এসে স্টেশনে দাঁড়ায়। ট্রেন থেকে নামেন জেলার মাত্র দু’জন।
বাকিরা গেলেন কোথায়?
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, ফরাক্কায় গঙ্গার সেতু পেরনোর পরে মালদহ স্টেশন পৌঁছনোর আগে ট্রেনটি দু’বার দাঁড়িয়েছিল। অভিযোগ, ফরাক্কা সেতু পার করার পরে এক বার এবং মালদহ স্টেশনে ঢোকার আগে রথবাড়ি এলাকায় আরও এক বার চেন টেনে ট্রেন থামিয়ে নেমে যান মুম্বই থেকে ফেরা বাকি শ্রমিকরা।
মঙ্গলবারও নতুন করে তিন জন আক্রান্ত হয়েছেন জেলায়। ফলে জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হল ১২৬ জন। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এক জন বাদে আক্রান্তদের সকলেই ভিন্ রাজ্য থেকে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিক। এমন পরিস্থিতিতেই ট্রেনের চেন টেনে ভিন্ রাজ্য থেকে ফেরা শ্রমিকরা স্টেশনে ঢোকার আগেই নেমে চলে যাওয়ায় উদ্বেগ বেড়েছে। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, ১৫ জুনের মধ্যে আরও ২৩টি ‘শ্রমিক স্পেশ্যাল’ ট্রেন জেলায় আসবে। আরও অন্তত ৭০টি ‘শ্রমিক স্পেশ্যাল’ ট্রেনের স্টপেজ রয়েছে মালদহে।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভূষণ চক্রবর্তী জানান, নতুন করে আক্রান্ত তিন জনকে কালিয়াচকে সুজাপুর পলিটেকনিক কলেজের কোভিড কেয়ার সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের একাংশের মতে, জেলায় আক্রান্তের সংখ্যাবৃদ্ধির বড় কারণ পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরা। আর সেই পরিযায়ী শ্রমিকরাই মালদহ স্টেশনে ট্রেন ঢোকার আগে চেন টেনে নেমে পড়ছেন দেখে প্রশাসনিক মহলেও উদ্বেগ বেড়েছে। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘স্টেশনে ঢুকলে লালারস পরীক্ষা করা হবে, সেই আশঙ্কা করেই হয়তো তাঁরা এ ভাবে ট্রেন থেকে নেমে পড়ছেন। কিন্তু এতে পরিস্থিতি আরও জটিল হবে।’’
মালদহ জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনিক স্তরে আমাদের আলোচনা হয়েছে। যে এলাকাগুলিতে চেন টেনে ট্রেন থামিয়ে দেওয়া হচ্ছে, সেখানে নজরদারি বাড়ানো হবে। রেলকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে।’’ রেলের মালদহ ডিভিশনের কোনও আধিকারিক অবশ্য এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি।