অভিযুক্তদের নিয়ে পুলিশ থানায় যায়। —নিজস্ব চিত্র।
মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের নকল সরবরাহের চেষ্টার অভিযোগে টুকলি-সহ পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলেন যুবক। মালদহের ইংরেজবাজারের রায়গ্রামের একটি স্কুলের ঘটনা। পুলিশ সূত্রে খবর, পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে টুকলি তৈরির সময় দু’জনকে হাতেনাতে ধরে ফেলে তারা। ধৃতদের মোবাইলও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। সেই পরীক্ষার প্রথম দিনেই প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। কে বা কারা প্রশ্নপত্রের ছবি তুলে তা সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন বলে অভিযোগ। পরে দেখা যায়, যে প্রশ্নপত্র ছড়িয়ে পড়েছে, তা আসল প্রশ্নপত্রই। ওই ঘটনায় পরীক্ষা শেষের এক ঘণ্টার মধ্যে দোষীদের চিহ্নিত করা গিয়েছে বলে জানিয়েছে মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদ। এই ঘটনায় মালদহের দুই পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা বাতিল করা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, মালদহের ওই স্কুল থেকেই টুকলি সরবরাহের চেষ্টার অভিযোগে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় তারা একটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এ বছর মাধ্যমিক দিচ্ছে ৯ লক্ষ ২৩ হাজার ১৩ জন। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পরীক্ষা চলবে। এ বার নকল রুখতে একাধিক পদক্ষেপ করেছে পর্ষদ। প্রযুক্তিরও সাহায্য নেওয়া হয়েছে। যেমন, এ বার মাধ্যমিকের প্রশ্নপত্রের প্রতিটি প্রশ্নের পাশে একটি করে কিউআর কোড রাখা হয়েছে। তাই কেউ প্রশ্নপত্রের ছবি তুললে সেই কিউআর কোডের সূত্রেই ছবিটি কোথা থেকে তোলা হয়েছে, তা চিহ্নিত করা সম্ভব। এ ভাবেই মালদহের দুই পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা বাতিল হয়ে গিয়েছে।
প্রথম পরীক্ষার পর পর্ষদ জানিয়েছে সব মিলিয়ে দুটো মোবাইল বাজেয়াপ্ত হয়েছে। ওই পরীক্ষাকেন্দ্র দুটি ছিল মালদহ এবং ঝাড়গ্রামে। এ ছাড়া পুরুলিয়া জেলার একটি পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে এক পরীক্ষার্থীর স্মার্টওয়াচ বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। এ বার ২০ জন পরীক্ষার্থী শারীরিক অসুস্থতার জন্য হাসপাতাল থেকে পরীক্ষা দিয়েছে। এক জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছে ল্যাপটপ নিয়ে। শারীরিক অসুবিধার কারণেই ওই পরীক্ষার্থীকে ল্যাপটপ ব্যবহারের অনুমতি দেয় পর্ষদ। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, ‘‘এ দিন (শুক্রবার) পরীক্ষা চলাকালীন দুই পরীক্ষার্থী মোবাইলে ছবি তুলে বাইরে পাঠাতে গিয়ে ধরা পড়েছে। তাদের সব পরীক্ষা বাতিল হয়েছে।’’ তিনি পরীক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘এ রকম আচরণ আর ভবিষ্যতে তোমরা করবে না। যে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে ,তাতে পাঁচ মিনিটের মধ্যে ধরা পড়ে যাবে। আগামী পরীক্ষাগুলো তোমাদের ভাল হোক।’’