অভিযান চলছে শীতলাপাড়ার ওই গুদামে। উদ্ধার হচ্ছে নিষিদ্ধ প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ। —নিজস্ব চিত্র।
শহরের একটি গুদামে মজুত করা প্রচুর নিষিদ্ধ প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ বাজেয়াপ্ত করা হল। তার পরেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ জানানো হল না। শনিবার এই ঘটনার জেরে প্রশ্ন উঠে গেল পুরসভার ভূমিকা নিয়েই।
শনিবার বেলা ১১টা নাগাদ শিলিগুড়ির ৭ নম্বর ওয়ার্ডে শীতলাপাড়ার ওই গুদাম থেকে প্রায় ১৫ টন প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ বাজেয়াপ্ত করে পুরসভা। ওই গুদাম একটি ট্রান্সপোর্ট কোম্পানির বলেই দাবি করা হয়। অথচ এ দিন বিকেল পর্যন্ত অভিযুক্ত সংস্থা এবং তার মালিকের বিরুদ্ধে পুলিশে কোনও অভিযোগই দায়ের করেনি পুর কর্তৃপক্ষ। বিকেল পর্যন্ত পুর-কর্তৃপক্ষের হেলদোল নেই দেখে স্থানীয় কংগ্রেস কাউন্সিলর পিন্টু ঘোষ পুলিশে অভিযোগ দায়ের করতে যান।
এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে পুরসভার সাফাই বিভাগের মেয়র পারিষদ মুকুল সেনগুপ্ত কেবল বলেন, ‘‘গুদাম মালিকের বিরুদ্ধে পুরসভার তরফে শীঘ্রই মামলা করা হবে।’’ তবে কবে সেই মামলা হবে, তা তিনি স্পষ্ট করেননি। তিনি বলেন, ‘‘আরও কয়েকটি জায়গায় প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ মজুত থাকার খবর রয়েছে। দ্রুত সেগুলিও বাজেয়াপ্ত করা হবে।’’
তবে এই ঘটনার পিছনে ‘রহস্য’ দেখছেন পুরসভার কংগ্রেসের পরিষদীয় দলের নেতা সুজয় ঘটক। তিনি বলেন, ‘‘আসলে পুর কর্তৃপক্ষ প্লাস্টিক-লবির বিরুদ্ধে কিছু করতে চাইছেন না। না হলে কেন পুলিশে অভিযোগ জানানো হল না? এর পিছনে কোনও রহস্যজনক কারণ রয়েছে। আমরা তাই নিজেরাই উদ্যোগী হয়েছি।’’ শহরের সুনাম রক্ষার্থে বাসিন্দাদের নিয়ে কংগ্রেস কাউন্সিলররা প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগের বিরুদ্ধে নামবেন বলে তিনি জানান।
পুরসভার তরফেই জানা গিয়েছে, গুদামের মালিকের বাড়ি গোঁসাইপুরে তবে তাঁর ব্যবসার দায়িত্বে থাকা এক ব্যক্তির দাবি, মালিক এখন দিল্লিতে থাকেন। দিন কয়েক আগে দিল্লি থেকে ওই প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ পাঠানো হয়েছে। সেগুলি অসমে যাওয়ার কথা। তবে এখনও কেউ নিতে আসেনি।
পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আইন মোতাবেক শিলিগুড়ি শহরে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ ব্যবহারের পাশাপাশি আনা-নেওয়াও নিষিদ্ধ। আগাম খবরের ভিত্তিতেই এ দিন ওই গুদামে অভিযান চালানো হয়। পুলিশ নিয়ে পুরসভার আধিকারিকেরা গুদামে যান। উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় কাউন্সিলর পিন্টুবাবুও। দুই গাড়ি নিষিদ্ধ প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ বাজেয়াপ্ত হয়। পিন্টুবাবু বলেন, ‘‘প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ বাজেয়াপ্ত করতে সমস্ত রকম সাহায্য করেছি। কিন্তু পুর কর্তৃপক্ষ পুলিশে অভিযোগ না জানানোয় প্রশ্ন উঠছেই।’’
বিধান মার্কেট মাছ-মাংসের বাজার-সহ শহরের বাজারগুলির একাংশে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ অনেক ক্ষেত্রেই ব্যবহার হচ্ছে বলে অভিযোগ। সে ক্ষেত্রে কর্মীদের মোতায়েন রাখা, ব্যবহারকারীর জরিমানা কেন করা হচ্ছে না কেন, সেই প্রশ্ন উঠেছে। পুর কর্তৃপক্ষ জানান, বিধানমার্কেট থেকে এ দিন পাঁচ কেজি প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।