বিনা টিকিটের যাত্রী ধরে ১১ কোটি

বিনা টিকিটের যাত্রী ধরে আদায় হয়েছে ১১ কোটি টাকারও বেশি। টিকিট না কেটে রেলের আধিকারিকদের কাছে ধরা পড়েছেন অন্তত ২ লক্ষ ২৪ হাজার জন। সাম্প্রতিক সময়ে বিনা টিকিটের যাত্রীদের জরিমানা করে উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের কাটিহার বিভাগের এত মোটা অঙ্কের টাকা আদায়ের অন্য নজির নেই বলে জানানো হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৬ ০২:১১
Share:

বিনা টিকিটের যাত্রী ধরে আদায় হয়েছে ১১ কোটি টাকারও বেশি। টিকিট না কেটে রেলের আধিকারিকদের কাছে ধরা পড়েছেন অন্তত ২ লক্ষ ২৪ হাজার জন। সাম্প্রতিক সময়ে বিনা টিকিটের যাত্রীদের জরিমানা করে উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের কাটিহার বিভাগের এত মোটা অঙ্কের টাকা আদায়ের অন্য নজির নেই বলে জানানো হয়েছে। ডিভিশন সূত্রে জানানো হয়েছে, এগারো কোটির অঙ্ক রেলের কোষাগারে জমা পড়েছে গত দু’বছরে। যার সিংহভাগ আদায় হয়েছে নিউ জলপাইগুড়ি (এনজেপি) স্টেশনে অভিযান চালিয়েই। নিয়মিত অভিযানে টিকিট কাটার প্রবণতাও বেড়েছে বলে রেলের দাবি। দু’বছরে ২ লক্ষের বেশি বিনা টিকিটের যাত্রী ধরা পডায় রেল কর্তাদের অনুমান টিকিট না কেটেই ধরা না পড়া যাত্রীর সংখ্যা অন্তত ৩ গুন হবে। কাটিহার বিভাগের ডিআরএম জানিয়েছেন, অভিযানের ধার আরও বাড়ানো হবে। একই স্টেশনে অন্তত তিনবার টিকিট পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

Advertisement

গত দু’বছরে টিকিট বিক্রি থেকে আয় হয়েছে ৮১৪ কোটিরও বেশি টাকা। রেল সূত্রের খবর, বিনা টিকিটের যাত্রী রুখতে কড়াকড়ি করতেই এই সাফল্য এসেছে। রাজস্ব বৃদ্ধির কারণ হিসেবে কাটিহার ডিভিশনের একটি নির্দেশকেই কৃতিত্ব দিচ্ছেন রেল আধিকারিকদের একাংশ। সম্প্রতি কাটিহারের ডিআরএম দফতরের তরফে বিভিন্ন স্টেশন কর্তৃপশক্ষকে জানিয়ে দেওয়া হয়, টিকিট থেকে রাজস্ব আদায় না বাড়লে ওই স্টেশনের পরিকাঠামো উন্নয়নে বেশি বরাদ্দ করা সম্ভব নয়। তারপর থেকেই বিনা টিকিটের যাত্রী রুখতে অভিযানে কড়াকড়ি শুরু। রেলের দাবি, এর ফলে যেমন আয় বেড়েছে, তেমনিই পরিকাঠামোগত উন্নয়ন হয়েছে যার সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে যাত্রী পরিষেবায়।

বুধবার উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের কাটিহার ডিভিশনের ডিআরএম উমাশঙ্কর সিংহ যাদব বলেন, ‘‘আমাদের মূল লক্ষ্য কিন্তু যাত্রী পরিষেবা বৃদ্ধি। রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি আখেরে পরিষেবার মান বাড়াতে সাহায্য করে। তবু এখনও যাত্রীদের থেকে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্র কিছুটা কমই রয়েছে। আমরা লাগাতার চেষ্টা চালাচ্ছি।’’

Advertisement

রেলের আধিকারিকদের একাংশের মনে নিয়মিত অভিযান হয় না বলেই বিনা টিকিটে রেল ভ্রমণের প্রবণতা বাড়ে। প্যাসেঞ্জার ট্রেনে টিকিট পরীক্ষা করতে গেলে অনেকসময়ে যাত্রী বিক্ষোভের মুখে পড়ার আশঙ্কাও থাকে বলে দাবি। সে কারণে গত বছরের মাঝামাঝি থেকেই নিউ জলপাইগুড়ি এবং শিলিগুড়ি জংশন দুই ব্যস্ত এবং গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনে লাগাতার অভিযান শুরু হয়। প্ল্যাটফর্ম এবং স্টেশন থেকে বের হওয়ার বিভিন্ন দরজা বা মুখে টিকিট পরীক্ষক এবং রেলের পদস্থ আধিকারিকরা দলবেঁধে দাঁড়িয়ে যাত্রীদের টিকিট দেখতে শুরু করেন। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি রুখতে সঙ্গে নেওয়া হয় আরপিএফ বাহিনীকেও। নিউ জলপাইগুড়ির সিনিয়র এরিয়া ম্যানেজার পার্থসারথী শীলকেও প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে টিকিট পরীক্ষা করতে দেখা যায়। তার সুবাদেই সুফল মিলেছে বলে দাবি। পার্থবাবুর কথায়, ‘‘নিয়মিত অভিযান চালানোর নির্দেশ দেওয়া রয়েছে। যথাযথ ভাবে অভিয়ান চলছে কিনা তাতেও নজরদারি রাখা হয়।’’

গত সপ্তাহ থেকেই উপভোক্তা সপ্তাহ পালন শুরু হয়েছে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলেও। এ দিন বুধবার ছিল সঞ্চার দিবস। কাটিহার বিভাগের ডিআরএম উমাশঙ্করবাবু জানিয়েছে কাটিহার ডিভিশনের বিভিন্ন রেলপথের গড় গতিও বেড়েছে। এর আগে ডিভিশনে গড় গতিবেগ ছিল ১০০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা। সেই গতিবেগ বেড়ে হয়েছে ঘণ্টাপ্রতি ১১০ কিলোমিটার। রেলপথের সংস্কারের সুবাদেই গতিবেগ বেড়েছে বলে দাবি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement