২০ শিশুর জায়গায় থাকে ১০০

হাসপাতালে গেলেই ‘রেফার’! মহকুমা থেকে জেলায়, সেখান থেকে মেডিক্যালে। এই রেফার-রোগের সংক্রমণ অনেক হাসপাতালেই। আজ আলিপুরদুয়ার হাসপাতাল।সরকারি হাসপাতাল থেকে রোগী রেফার নিয়ে চিন্তার শেষ নেই রাজ্যের স্বাস্থ্য কর্তাদের৷ অযথা রেফার বন্ধে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীও। যদিও সংখ্যার নিরিখে উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতাল কিছুটা হলেও স্বস্তি দিতে পারে রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তাদের৷

Advertisement

পার্থ চক্রবর্তী

আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৮ ০৬:০১
Share:

রোগী রেফার করার সংখ্যা কমিয়ে এনে রীতিমত ‘নজির’ গড়েছে আলিপুরদুয়ার হাসপাতাল। সেই হাসপাতালই হিমশিম খাচ্ছে রেফার রোগীদের, বিশেষ করে নবজাতক শিশুদের জায়গা দিতে! সূত্রের খবর, হাসপাতালের এসএনসিইউ-তে কুড়িটি নবজাতক শিশুকে রাখার পরিকাঠামো রয়েছে৷ কিন্তু প্রতিদিনই সেই এসএনসিইউ-তে রাখতে হচ্ছে ৭০-৮০টি শিশুকে৷ কোনও কোনও দিন সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ৯০-১০০-তেও৷ যার অন্যতম কারণ- এই রেফার রোগ৷

Advertisement

সরকারি হাসপাতাল থেকে রোগী রেফার নিয়ে চিন্তার শেষ নেই রাজ্যের স্বাস্থ্য কর্তাদের৷ অযথা রেফার বন্ধে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীও। যদিও সংখ্যার নিরিখে উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতাল কিছুটা হলেও স্বস্তি দিতে পারে রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তাদের৷ হাসপাতালের কর্তাদের দাবি অনুযায়ী, প্রতি মাসের হিসেবে সার্বিকভাবে জেলা হাসপাতালগুলির রেফারের হার যেখানে ১৫ শতাংশ, সেখানে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতাল সেই হার ৫-৬ শতাংশে কমিয়ে নিয়ে এসেছে৷ কিন্তু জেলার অন্য হাসপাতাল থেকে রেফার হওয়া রোগী, বিশেষ করে সদ্যোজাতদের নিয়েই চিন্তিত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা৷

আলিপুরদুয়ার জেলায় বড় হাসপাতাল বলতে জেলা হাসপাতাল, বীরপাড়া রাজ্য সাধারণ হাসপাতাল, ফালাকাটা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল (এই হাসপাতালে এখনও ইন্ডোর চালু হয়নি) রয়েছে৷ এ ছাড়া ছ’টি ব্লকের প্রতিটিতে একটি করে গ্রামীণ হাসপাতাল রয়েছে৷ আলিপুরদুয়ার ও বীরপাড়া হাসপাতালে এসএনসিইউ রয়েছে৷ এ ছাড়া প্রতিটি গ্রামীন হাসপাতালে এসএনএসইউ রয়েছে৷ কিন্তু এক চিকিৎসকেরই অভিযোগ, বীরপাড়া হাসপাতালে এসএনসিইউ থাকলেও, সেখানে কোনও চাপ নেই৷ ফালাকাটা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে এসএনসিইউ এখনও তা চালু হয়নি৷ এই অবস্থায় আলিপুরদুয়ারে উপর বিশাল এলাকা, এমনকী লাগোয়া অসমেরও চাপ এসে পড়ছে৷

Advertisement

হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশের মতে, এর ফলে দুর্ভোগ বাড়ছে অসুস্থ নবজাতকদেরও৷ আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালের এসএনসিইউ-তে কুড়িটি ওয়ার্মার রয়েছে৷ যার একেকটির আয়তন লম্বায় ৭৫ সেন্টিমিটার, চওড়া ৫৫ সেন্টিমিটার৷ ছোট্ট সেই ওয়ার্মারগুলির একেকটিতে অনেক সময় চার-পাঁচটি সদ্যোজাত শিশুকে রাখতে হচ্ছে৷ তবে হাসপাতাল সুপার চিন্ময় বর্মণ বলেন, ‘‘এসএনসিইউতে প্রচণ্ড চাপ রয়েছে ঠিকই, কিন্তু সেজন্য পরিষেবায় কোনও ঘাটতি নেই৷ তবে এই চাপের জন্যই এসএনসিইউ-তে আমরা চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীর সংখ্যা বৃদ্ধির প্রস্তাব পাঠিয়েছি৷ নতুন ভবন হলে এসএনসিইউ-র পরিষেবা বৃদ্ধি পাবে বলে আশা রয়েছে৷’’

আলিপুরদুয়ারের সিএমওএইচ পূরণ শর্মা বলেন, ‘‘গ্রামীণ হাসপাতালে এসএনএসইউ থাকলেও, রেফার নিয়ে একটা সামাজিক চাপও থাকে৷ তবে গ্রামীণ হাসপাতালের এসএনএসইউ-র মানোন্নয়নে আমরা নিয়মিত সেখানকার চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার চেষ্টা করছি৷ যাতে রেফার সমস্যা মেটানো যায়৷’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement