তৎপর: লকডাউনে তৎপর পুলিশ। শিলিগুড়ির হাসমিচকে। নিজস্ব চিত্র
ক্রমশ বাড়ছে উপসর্গযুক্ত করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। এখন শিলিগুড়ির দু’টি কোভিড হাসপাতালে ১০০টি করে দু’শো শয্যা রয়েছে। এখন যা পরিস্থিতি তাতে এই পরিকাঠামো দিয়ে সামাল দেওয়া মুশকিল বলে জানাচ্ছেন করোনা চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীরাই। কোভিড হাসপাতালে শয্যা বাড়ানোর দাবি উঠেছে বেশ কিছুদিন ধরেই। অবশেষে কাওয়াখালির কোভিড হাসপাতালে ৭০টি শয্যা বাড়ানো হচ্ছে। তিরিশটির মতো শয্যা বাড়ানো হবে মাটিগাড়া কোভিড হাসপাতালেও। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় প্রথমে কাওয়াখালির কোভিড হাসপাতালে শয্যা বাড়ানোর কাজ চলছে। সেই সঙ্গে শিলিগুড়ি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে যে সেফ হাউজ় তৈরি হচ্ছে সেখানেও আইসিইউ’র পরিকাঠামো রাখার কথা হয়েছে। সেখানে আলাদা ওয়ার্ডের মতো করে আটটি আইসিইউ শয্যা করা হবে বলে সূত্রের খবর। সেই মতো ভেন্টিলেটর, সব সময়ের জন্য চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীও থাকবেন।
শিলিগুড়িতে আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে। উত্তরবঙ্গের জেলাগুলোর মধ্যে করোনা সংক্রমণ সব চেয়ে বেশি যেখানে সেই মালদহকেও ছাড়িয়ে যাচ্ছে কখনও। তার উপর বিপদ বাড়িয়েছে উপসর্গযুক্ত করোনা রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি। ওই রোগীদের বাড়িতে বা সেফ হাউজ়ে রাখার ক্ষেত্রেও সমসস্যা রয়েছে। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য বলেন, ‘‘শয্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত আগেই হয়েছে। দ্রুত ওই কোভিড হাসপাতালে শয্যা বাড়ানো হচ্ছে। সেই মতো পরিকাঠামোও বৃদ্ধি করা হবে।’’ তবে দু’টি কোভিড হাসপাতাল মিলিয়ে ১০০ টির মতো শয্যা বৃদ্ধি করলেও পরিস্থিতি সামলানো শক্ত। সব মিলিয়ে বর্তমানে কোভিড হাসপাতালে ৫০০ শয্যা দরকার বলেই স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের একাংশ মনে করছেন।
পুরসভা এবং স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শিলিগুড়ি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ৭০ শয্যার সেফ হাউজ় চালু হতে চলেছে। তা ছাড়া আটটি বিশেষ শয্যা রাখা হচ্ছে। রোগীদের কারও মৃদু উপসর্গ দেখা দিলে বা পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠলে দ্রুততার সঙ্গে চিকিৎসা ব্যবস্থা করতে সেখানেই আইসিইউ’র মতো পরিকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে। পুরসভার বিদায়ী বিরোধী দলনেতা তথা তৃণমূলের পরিষদীয় দলনেতা রঞ্জন সরকার জানান, বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। ইন্ডোর স্টেডিয়ামে সেফ হাউজ়ে প্রয়োজন মতো সেই পরিকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
ইতিমধ্যেই স্বাস্থ্য দফতর থেকে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলোর জন্য বেশ কিছু ভেন্টিলেটর পাঠানো হচ্ছে বলে জানানো হয়। ওই সমস্ত ভেন্টিলেটর দার্জিলিং জেলা তথা শিলিগুড়িতেও কিছু মিলবে বলে আশা। কোভিড হাসপাতালে শয্যা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে পরিকাঠামো বাড়াতেও তা সাহায্য করবে। ভেন্টিলেটর কতগুলো মিলবে তার উপর নির্ভর করে পরে কোভিড হাসপাতালেও আইসিইউ শয্যা বাড়ানো হবে। বর্তমানে কাওয়াখালি কোভিড হাসপাতালে ২৮টি এবং মাটিগাড়া কোভিড হাসপাতালে ২৩টি আইসিইউ শয্যা রয়েছে।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)