কাগজে-কলমে ঘাঁটি তৈরি হয়ে গিয়েছে বছর চারেক আগে। কিন্তু দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফ্রেজারগঞ্জে উপকূলরক্ষী বাহিনীর জাহাজ রাখার জায়গা নেই। স্থায়ী সদর দফতর বা কর্মী-অফিসারদের পাকাপাকি ঠাঁইও নেই! ফলে কাছেপিঠে বিপদ ঘটলে ভরসা সেই হলদিয়া ঘাঁটি। বুধবার রাতে স্যান্ডহেডের কাছে জলযানে আগুন লাগায় হলদিয়া থেকে জাহাজ এসেছে। ফ্রেজারগঞ্জে পরিকাঠামোর এই অভাব তাই অত্যন্ত বিপজ্জনক বলে মনে করছেন উপকূলরক্ষী বাহিনীর কর্তাদের একাংশ।
কিন্তু ফ্রেজারগঞ্জে পরিকাঠামোর অভাব কেন? উপকূলরক্ষী বাহিনী সূত্রের খবর, স্থায়ী ঘাঁটি তৈরির জন্য রাজ্য সরকারের জমি দেওয়ার কথা। কিন্তু তা মেলেনি। প্রায় ২৪ একর জমি প্রয়োজন। বছরখানেক আগে অন্তত ১০ একর জমি চেয়ে ফ্রেজারগঞ্জ ঘাঁটির কম্যান্ডান্ট অভিজিৎ দাশগুপ্ত দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা প্রশাসনকে চিঠি লেখেন। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, জেলাশাসক ওই জমির মূল্যায়নের জন্য বিষয়টি ভূমি দফতরে পাঠিয়েছেন। কবে জমি মিলবে, কেউই তা বলতে পারছেন না।
উপকূলরক্ষী বাহিনীর এক কর্তা বলেন, ‘‘হলদিয়ায় জাহাজের প্রবেশ-প্রস্থান অনেক সময়েই নদীর জোয়ার-ভাটার উপরে নির্ভর করে। কোনও রকম আপৎকালীন পরিস্থিতিতে তাই সমস্যা হতে পারে। ফ্রেজারগঞ্জ বা বকখালিতে কিন্তু সেই সমস্যা নেই। ফ্রেজারগঞ্জের ঠিকঠাক ব্যবহারের জন্যই সেখানে স্থায়ী ঘাঁটি দরকার।’’
উপকূলরক্ষী বাহিনীর সূত্র জানাচ্ছে, আপৎকালীন পরিস্থিতি এবং উপকূলীয় নিরাপত্তার দিক থেকে ফ্রেজারগঞ্জ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ক্রমশ বা়ড়ছে পর্যটকও। কিন্তু চার বছর ধরে সেখানে একটি হোটেল ভা়ড়া করে বাহিনীর দফতর চলছে। স্থানীয় নানা বাধায় জমি মিলছে না। মৎস্যবন্দরের কাছে অস্থায়ী ভাবে একটি হোভারক্রাফট রাখার জায়গা মিলেছে। কিন্তু সাগরে হোভারক্রাফট দিয়ে সব সময় কাজ চালানো যায় না।
‘‘বুধবারেই যেমন একটি মাছ ধরার নৌকা উল্টে গিয়েছে। উত্তাল সাগরে হোভারক্রাফট দিয়ে উদ্ধারকাজ চালাতে সমস্যা হচ্ছে,’’ বলেন বাহিনীর এক কর্তা। তাঁর মতে, অবিলম্বে জমি না-পেলে সমস্যা বাড়বে। বড় বিপদ ঘটলে আফসোস করা ছাড়া উপায় থাকবে না।