সন্ধ্যা ৭টার পরে লোকাল ট্রেন চলবে না। রবিবারই ঘোষণা করেছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। ছবি: চিত্রদীপ মুখোপাধ্যায়।
সন্ধ্যা ৭টার পরে লোকাল ট্রেন চলবে না। রবিবারই ঘোষণা করেছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। এর পরে রাজ্য ও রেলের মধ্যে আলাদা করে কোনও আলোচনা হয়নি। এর ফলে রেল রাজ্যের ঠিক করে দেওয়া বিধিনিষেধ মেনে লোকাল ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে সেই সিদ্ধান্তে পূর্ব রেল ও দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মধ্যে ফারাক রয়েছে। শিয়ালদহ স্টেশন থেকে শুধুমাত্র পূর্ব রেলের ট্রেন চললেও হাওড়া থেকেই পূর্ব রেলের পাশাপাশি দক্ষিণ-পূর্ব রেলের লোকাল ট্রেন চলে।
সোমবার দুপুর পর্যন্ত রেলের পক্ষে যে সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে তাতে পূর্ব রেল সন্ধ্যা ৭টার পরে কোনও লোকাল ট্রেনই মূল স্টেশন থেকে ছাড়বে না। পূর্ব রেল জানিয়েছে, সকাল থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত টাইমটেবল মেনেই ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে ট্রেন চলবে। কোনও ট্রেন বাড়ানো বা কমানোর পরিকল্পনা নেই রেলের। কিন্তু ৭টার পরে কোনও ট্রেনই কোনও গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দেবে না। তবে ৭টা বা তার আগে ছেড়ে যাওয়া ট্রেন পথে থেমে থাকবে না। নির্দিষ্ট সময় মেনে গন্তব্যে পৌঁছবে। সুতরাং শিয়ালদহ স্টেশন থেকে এবং হাওড়া স্টেশন থেকে পূর্ব রেলের লোকাল ট্রেন সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত স্বাভাবিক ভাবেই চলবে। আবার বর্ধমান, কৃষ্ণনগর, কাটোয়া কিংবা বনগাঁ থেকেও সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত টাইম টেবল মেনে ট্রেন ছাড়বে এবং সময় মতো গন্তব্যে পৌঁছবে। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক একলব্য চক্রবর্তী আনন্দবাজার অনলাইনকে জানিয়েছেন, সন্ধ্যা ৭টার পরে কোনও ভাবেই কোনও লোকাল ট্রেন চলবে না। তবে দূরপাল্লার ট্রেন চলাচলে কোনও বিধিনিষেধ থাকছে না।
এক নজরে দেখে নিন লোকাল ট্রেনের সময় সূচি। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
তবে এই নিয়ম মানছে না দক্ষিণ-পূর্ব রেল। সন্ধ্যা ৭টার আগেই যাতে সব ট্রেন গন্তব্যে পৌঁছে যায় সেটা মাথায় রেখে ট্রেন চালানোর কথা ভাবছে তারা। ঠিক হয়েছে হাওড়া থেকে খড়্গপুরগামী ট্রেন তখনই শেষবার ছাড়বে যখন ৭টার মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছতে পারবে। একই ভাবে মেদিনীপুর, খড়্গপুর, পাঁশকুড়া থেকেও সেই হিসেবেই ট্রেন ছাড়বে। দক্ষিণ পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক নীরজ কুমারের বক্তব্য, ‘‘আমরা চেষ্টা করছি সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে যাতে সব লোকাল ট্রেন গন্তব্যে পৌঁছে যায়। আগামী ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ট্রেন চালানোর ক্ষেত্রে সেই নিয়ম মেনে চলা হবে। তবে গোটা দিন স্বাভাবিক নিয়মে টাইম টেবল মেনে ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে ট্রেন চলবে।’’
এর আগে লকডাউন শিথিল হওয়ার পরে অনেক প্যাসেঞ্জার স্পেশাল ট্রেন চালিয়েছিল রেল। কিন্তু এ বার এখনও পর্যন্ত তেমন কোনও পরিকল্পনাই নেই পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব রেলের। রেলকর্মীদের জন্য বিশেষ ট্রেন চালানো হলেও তাতে সাধারণ যাত্রীরা উঠতে পারবেন না বলেই সিদ্ধান্ত রেলের। পূর্ব রেলের পক্ষে একলব্য বলেন, ‘‘রেল কর্মীদের জন্য কখন কোন রুটে ট্রেন চালানো হবে তা এখনও ঠিক হয়নি। আর তাতে সাধারণ যাত্রীরা উঠতে পারবেন কি না সে ব্যাপারে রাজ্য সরকারের থেকে কোনও নির্দেশ আসেনি। এমনকি, জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্তরাও ওই ট্রেন ব্যবহার করতে পারবেন কি না সে ব্যাপারে রাজ্য কিছু জানায়নি। এই ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য সরকারই। এখনও পর্যন্ত এ নিয়ে রাজ্যের সঙ্গে রেলের কোনও বৈঠক হয়নি। কোনও নির্দেশও আসেনি। আর রেলকর্মীদের জন্য কখন কোন রুটে ট্রেন চালানো হবে তা সাধারণকে এখনই জানানোও হবে না।’’